রাজ্যের আবেস্থা[১] যত লিখিরা জানায়।
কন্যার কথা লেখে রাণী করিয়া আলায়[২]॥
তিন বছর যায় রাজা আছত বৈদেশে।
ঘরেতে তোমার কন্যা আছে কোন্ বেশে॥
পরথম যৌবন কন্যার লোকে কানাকানি।
তা শুন্যা কেমনে সহে মায়ের পরানি॥
বিবাহের কাল গেলে উচিত না হয়।
এমন কন্যা ধরে রাখ্লে ধর্ম্মনাশ হয়॥
পত্র পাইয়া তুমি বিলম্ব না কর।
শীঘ্র চলিয়া আইস আপনার ঘর॥
এই পত্র লেখ্যা রাণী কোন্ কাম করে।
লোক দিয়া পাঠায় পত্র মুর্শিদাবাদ সরে॥
এক গণক আইল তবে খুঙ্গীপুথি লইয়া।
এই গণক আইয়া[৩] কয় গণিয়া বাছিয়া॥
“হুড় পরী জিনি কন্যা পরমা সুন্দরী।
ইহার সুখের কথা কহিতে না পারি॥
রাজার ঘরে অইব[৪] বিয়া রাজার পাটরাণী।
সুখেতে কাটাইব কাল কহিলাম আমি॥”
আর গণক বলে “কন্যার চলন-চালন[৫] বেশ।
যোগ্য[৬] ভুরু আছে কন্যার মাথায় দীঘল কেশ॥
পাশাল[৭] কপাল কন্যার মুক্তা দন্তপাট[৮]।
এই কন্যার বড় ভাগ্য আছে রাজার পাট[৯]॥
চরণ ধোয়াইব কন্যার শতেক কিঙ্করে।
দক্ষিণ দেশে অইব বিয়া ধনী সদাগরে॥”
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৯৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪২
মৈমনসিংহ-গীতিকা