কইও কইও কোকিলারে কইও বঁধুর আগে।
গাঁথা মালা বাসী হইলে প্রাণে বড় লাগে॥
যদি নাহি যাওরে কোকিল আমার মাথা খাও।
অভাগিনী লীলার দুঃখ বঁধুরে জানাও॥
“নূতন বৎসর আইল ধরি নব সাজ।
কুঞ্জে ফুটে রক্তজবা আর গন্ধরাজ॥
গাছে ধরে নবপত্র নবীন মুকুল।
চারিদিকে শুনি ধুমক্ষিকার রোল॥
এহিত বৈশাখ নাম অতি দুঃসময়।
দারুণ রৌদ্রের তাপে তনু দগ্ধ হয়॥
কোকিল কোকিলা মাগে বসন্ত বিদায়।
আমার বঁধু এমন কালে রইয়াছে কোথায়॥
নূতন বৎসর আইল মনে নব আশা।
অভাগী লীলার কাছে কেবলি নৈরাশা॥
“জ্যৈষ্ঠমাস জ্যেষ্ঠরে সকল মাসের বড়।[১]
ফলে-ফুলে তরু-লতা দেখিতে সুন্দর॥
আম পাকে জাম পাকে পাকে নানান ফল।
মন সাধে ডালে বসি বিহঙ্গসকল॥
নানা গীতি গায়রে তারা নানান ফল খায়।
অচেনা অজানা দেশে উড়িয়া বেড়ায়॥
নিত্য আসে নব পাখী নূতন ভ্রমর।
কান্দিয়া সুধাইলে কেহ না দেয় উত্তর॥”
দারুণ গ্রীষ্মের তাপ জ্বলন্ত অনল।
ভূতলে শুইল কন্যা পাতিয়া অঞ্চল॥
“আষাঢ় মাসের কালে আশা ছিল মনে।
অবশ্য আসিবে বঁধু লীলা-সম্ভাষণে॥
নূতন বরষা আসে লইয়া নব আশা।
মিটিবে অভাগী লীলার মনের যত আশা॥
- ↑ জ্যৈষ্ঠমাস বড়=জ্যৈষ্ঠ মাসের দিন খুব দীর্ঘ।