সেই না সুখের কথা যখন হয় মনে।
মদিনার বয় পানী অজ্জর[১] নয়ানে॥
“এমন নিদয় খাম কেমনে অইলা৷
তোমার বিরয়ে[২] কান্দি বসিয়ে একেলা॥”
খসম কাটে চাড়ি[৩] আর আমি আমি পানী।
দুয়ে মিল্যা করি কাম আমি অভাগিনী॥
এমন না খসম গেল মোরে ফাঁকি দিয়া।
কেমনে থাকিবাম আমি পরাণে বাঁচিয়া॥
“আমার মতন নাই রে আর অভাগিনী।
ভরা ক্ষেতের মধ্যে আমার কে দিল আগুণি॥
কোন্ না পরাণে আমি থাকবাম বাঁচিয়া।
মন-পংখী মোর উড়্যা গেছে আছে কেবল কায়া॥”
কান্দিয়া কান্দিয়া বিবির দুঃখে দিন যায়।
খানাপিনা[৪] ছাড়্যা কেবল করে ‘হায় হায়’॥
তারপরে না চিন্তায় শেষে হইল পাগল।
যাইনা মুখে লয় তাই যে বকয়ে কেবল॥
ক্ষণে হাসে ক্ষণে কান্দে ক্ষণে দেয় গালি।
ক্ষণে গায় ক্ষণে জোকার[৫](দেয়) ক্ষণে করতালি॥
খাওন বেগর[৬] আর এই না আবেস্থায়[৭]।
সোনার অঙ্গ মৈলান হইয়া হাড়েতে মিশায়॥
দিনে দিনে সর্ব্ব অঙ্গ হইল যে শেষ।
কালি কেশরতা[৮] মুখ অইল বিশেষ॥
তারপর না একদিন সগল চিন্তা রইয়া।
বেস্তের[৯] হুরী[১০] না গেল বেস্তেতে চলিয়া॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৪১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা মদিনা
৩৮১