পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষোড়শ পরিচ্ছেদ-প্রতাপাদিত্যের রাজধানী প্রতাপাদিত্যের রাজধানী কোথায় ছিল, ইহা একটি প্রশ্নের বিষয়। এই সন্ধুত্তর দিবার জন্ত বহুবার সুন্দরবন ও তৎসান্নিধ্যে ভ্রমণ করিয়াছি, বহুবর্ষ ধরিয়া সন্ধান লইয়াছি। সে চেষ্টা ও সাধনার ফল এই স্থানে প্রকটিত করিৰ। এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হইলে, সঙ্গে সঙ্গে বিচার করিতে হইবে, বিক্রমাদিত্যের রাজধানীর অবস্থান কোথায়। বিক্রমাদিত্যের রাজধানীকে আমরা যশোরের প্রথম বা পুরাতন রাজধানী বলিব এবং প্রতাপের রাজধানীকে দ্বিতীয় বা নৃতম রাজধানী বলিয়া উল্লেখ করিব। ধূমঘাট সুন্দরবনের একটি পত্তন, উহা আধুনিক ম্যাপে ১৬৫ নং ধূমঘাট বা বংশীপুর লাট বলিয়া খ্যাত। গোবরডাঙ্গার দক্ষিণে টিবির মোহানায় যমুনা ও ইছামতী দুই নদী মিশিয়াছিল; পরে ধূমঘাট লাটের উত্তরাংশে পুনরায় উহারা বিযুক্ত হইয়া দুইদিকে গিয়াছিল। এই মোহানার সন্নিকটে উক্ত ধূমঘাটের মধ্যে একটি দুর্গের ভগ্নাবশেষ আছে। এই দুর্গ হইতে পূৰ্ব্বদিকে ঈশ্বরীপুর। ঈশ্বরীপুরের পার্শ্ববর্তী স্থানের সাধারণ নাম যশোহর। কিন্তু যশোহর বলিতে কোন নির্দিষ্ট স্থানকে বুঝায় না। যশোহর এক সময় বহুবিস্তৃত সহর ছিল ; ঈশ্বরীপুর উহার একাংশ মাত্র। সে সহরের অন্তান্ত অংশ এখন তত খ্যাত নহে বলিয়, যশোহর বলিতে এখন সাধারণতঃ ঈশ্বরীপুর অঞ্চলকেই বুঝায়। পূৰ্ব্বোক্ত নূতন ও পুরাতন রাজধানী সম্বন্ধে কোন স্থির সিদ্ধান্তে উপনীত হইবার জন্য আমাদিগকে অন্ততঃ ৫টি বিভিন্ন মতের সমালোচনা করিতে হইবে ঃ(১) প্রতাপাদিত্যের রাজধানী ধুমঘাটের উত্তরাংশে ছিল ; কিন্তু বিক্রমদিত্যের রাজধানী কেথায় ছিল, তাহ ঠিক নাই। মহামতি বিভারিজ প্রতি পাশ্চাত্য লেখকের এই মতাবলম্বী। (২) বিক্রমাদিত্যের রাজধানী উক্ত ধূমঘাটের উত্তরাংশে ছিল এবং প্রতাপের রাজধানী আধুনিক ধূমঘাটের দক্ষিণভাগে অবস্থিত ; কিন্তু সে স্থান এক্ষণে ঘোর জঙ্গলাকীর্ণ। সাধারণ শিক্ষিত সম্প্রদায় এই মতাবলম্বী। (৩) বিক্ৰমাদিত্যের রাজধানী উক্ত উত্তরাংশে বা ঈশ্বরীর অঞ্চল ছিল; কিন্তু প্রতাপাদিতোর রাজধানী ছিল গঙ্গার মোহানায় সগর দ্বীপে। এই দ্বীপের অন্ত নাম চ্যাণ্ডিকান দ্বীপ। বাবু নিখিলনাথ রায় এই মতের প্রবর্তক। ।