বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/২৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ২৩৬: ] সংসারের কি ধৰ্ম্ম ? স্বার্থপরতা। স্বার্থপরতা-বিষ শরীরে পরিব্যাপ্ত হুইয়া পড়িলে আর রক্ষা থাকে না। সংসার-ভুজঙ্গের একটা ফণী নহে। যত নরনারী তত ফণী ; প্রত্যেক নরনারী যখন দংশন করিতে আরম্ভ করে, তখন নিস্তার পাইবার উপায় থাকে না। পিতা নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করিবার চেষ্টা পাইতেছেন, মাতা গহার স্বার্থ বিস্মৃত হন না, ভ্রাতা ভগ্নীরা আপন আপন স্বার্থ লইয়া ব্যতিব্যস্ত হইয়া থাকেন, স্ত্রীর স্বার্থের অবধি নাই, পুত্র কন্যাদিগের স্বার্থের স্রোত অতি ভয়ানক । প্রতিবেশী, স্বদেশী, বিদেশীদিগের স্বার্থ সৰ্ব্বদাই প্রতীক্ষা করিতেছে । এইরূপে প্রত্যেকে প্রত্যেকের নিকট হইতে স্বার্থপূরণের নিমিত্ত ব্যতিব্যস্ত হইয়া রহিয়াছেন। সংসারের এই আভ্যন্তরিক ব্যাপার যিনি না অবগত হইয়। কার্য্য করিতে অগ্রসর হন, তাহার জীবন সংশয় হইয়া আইসে । বর্তমানকালে আমরা ব্রহ্মচৰ্য্যাশ্রম অবলম্বন করিয়া ধূলাপড় শিক্ষা না করিয়া সংসারে প্রবেশ করিয়া থাকি, তজ্জন্যই সংসারের আভ্যন্তরিক রহস্য অর্থাৎ স্বার্থপরতা-গরল সম্বন্ধে কোন জ্ঞান থাকে না । যিনি যাহা বলেন, আমরা অবাধে তাহাই সম্পন্ন করিতে যত্নবান হইয়া থাকি । সংসার স্বার্থপরতার বশবৰ্ত্তী হইয়া আমাদিগকে যাহা করিতে বলেন, তাহ দ্বারা বাস্তবিক আমাদের কল্যাণ হইতে পারে না। আমাদের দ্বারা সংসারের স্বাৰ্থচরিতার্থ হওয়া আত্মকল্যাণের কথা নহে । একটা দৃষ্টাস্তের দ্বারা ইহার যথার্থতা স্থির করা হউক। সস্তানের প্রতি পিতা মাতার স্নেহ বলিয়া যাহ। আমরা বুঝিয়া থাকি, তাহাতে স্বার্থপরতা আছে কি না ? আমরা স্থির হইয়। যদ্যপি তাহাদের কার্য্যকলাপ আলোচনা করিয়া দেখি, তাহাহইলে সৰ্ব্বত্রে স্বার্থপরতাই দেখা যাইবে ।