পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানাকথা ; অরণ্যে রোদন ף כלי সেই কোলাহলের অর্থ বুঝিবার পূৰ্ব্বে বিশ্ববিদ্যালয় জন্তুটা কিরূপ, বুঝিবার একবার চেষ্টা করা উচিত। কেহ বলেন, উহা মাংসাশী, উহা কেবল বালকবৃন্দের রক্ত খায় ও হাড় চিবায় ; কেহ বা বলেন, না, উহা উদ্ভিজ্জাণী ও তৃণভোজী, উহার বাটে দুধ পাওয়া যায়, উহার শিঙে ভেঁপু হয় ও উহার হাডে আত্মারাম সবকাবের প্রেতপুরুষ চমকিত হয়। প্রাণতত্ত্বে বিদ্যা না থাকিলেও আমরা যখন উহার দুধ খাহয়া মানুষ হইয়াছ, উহার হাড়ে ভেলকি বাজি দেখাইয়| আসিতেছি, এব এই মূহূর্বেই যখন তারস্বরে ভেঁপু বাজাইতে দাড়াইয়াছি, তখন উহার সহিত আমাদের পবিচয় কিছু না আছে, এমন নহে। এবং সেই পরিচয়ের উপর নির্ভর করিয়া আপনাদের ধৈর্য্য ভিক্ষা করিতেছি । R শিক্ষা বা উচ্চশিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনের এক মাত্র উদেশ্য তাহাতে সন্দেহ মাত্র নাই, কিন্তু সেই শিক্ষাটাই বা কিরূপ, বুিশ্ববিদ্যালয়ের কিরূপ শিক্ষা দেওয়া উচিত, তৎসম্বন্ধে নানাবিধ থিওরি প্রচলত আছে। এক সম্প্রদায় বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য লিবারাল এজুকেশন দেওয়া । এই লিবারাল এজুকেশন শব্দটা খুব জমকাল শুনায় , দূর হইতে উহা স্থর্যকরমণ্ডিত আকাশচারী এক খণ্ড মেঘের মত খুব জাকাল মূৰ্ত্তি গ্রহণ করে , কিন্তু কাছে ধারতে গেলেই উহা কুয়াসার মত ধবা দেয় না। একটু চাপয় ধরিলে লিবারাল এজুকেশনের অর্থ দাডাঁয়—সকল শাস্থেই জ্ঞান লাভ, এবং সকল শাস্ত্রে জ্ঞান লাভের নামান্তর সকল শাস্ত্রেই অপরিপক্কতা ও পল্লব-গ্রাহতা । সকল শাস্ত্রে বলিলে বোধ করে ভুল হয় ; যে সকল পণ্ডিতেরা কোন গৃঢ় কারণে গণিত শাস্ত্রকে ও বিশেষতঃ বিজ্ঞান শাস্ত্রকে একটু সন্দেহের চক্ষে দেখিয়া থাকেন, তাহার বোধ করি, ঐ দুই শাস্বকে লিবারাল এজুকেশনের বিষয় করিতে চাহেন না। ভাষা সাহিত্য দর্শন ইতিহাস প্রভৃতি সকল শাস্ত্রই এই লিবরিাল এজুকেশনের বিষয় হইতে পারে ; গণিত বিজ্ঞানও যে না পারে, তাহা নহে ; তবে ঐ দুই বিদ্যা কতকটা টেকৃনিক্যাল গোছের ; বিশ্ববিদ্যালয়ে তাহার স্থান না থাকিলেও তত ক্ষতি নাই। কিন্তু কি প্রাচীন, কি আধুনিক, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ইতিবৃত্ত আলোচনা করিলে, সকল শাস্ত্রেই কিছু কিছু জ্ঞান দান এবং টেকৃiনক্যাল শাস্ত্রকে যথাসাধ্য বর্জন করিয়৷ লিবারাল বিদ্য দানই যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান উদ্দেশু, তাহ, বোধ হয় না । বরং বোধ হয়, কোন একটা বিশেষ শাস্বে পারদর্শী করাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য উদ্দেশ্য । ইউরোপের প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ন্যায়শাস্ত্র, থিয়লজি, আইন, গণিত শাস্ত্র, এমন কি, সঙ্গীত শাস্ত্র প্রভৃতি টেকৃনিক্যাল শাস্ত্রে পারদর্শিত জন্মাইবার ব্যবস্থা ছিল। কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় কোন কোন টেকৃনিক্যাল শাস্ত্রের আলোচনার জন্য ও অধ্যাপনার জন্য খ্যাতি লাভ করিয়াছিল। একালেব অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই চিকিৎসা, ইঞ্জিনিয়ারিং, আইন প্রভৃতি টেকৃiনক্যাল শাস্ত্রের অধ্যাপনা হয়। আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ কৃষি, বাণজ্য প্রভৃতির স্বতন্ত্র ফ্যাকলটির যোগ হইতেছে। আর বিজ্ঞানের কথা,-বিবিধ বিজ্ঞান শাস্ত্রের অধ্যাপনাহ একালের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের যেন সৰ্ব্বপ্রধান কাজ হইয়া উঠিয়াছে। আমাদের দেশের প্রাচীন তুপাঠীগুলিকে যা বিশ্বাবস্থাল.ে *ানভুক্ত মনে কার, সেখানেও দেখিবে, কোথাও সাহিত্য, পোথাও ন্যায়শাস্ত্র, কোথাও বা ধৰ্ম্মশাস্ত্র অধ্যাপনার বশেষ বন্দোবস্ত