পাতা:শকুন্তলা (ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর).djvu/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
শকুন্তলা

করিতে লাগিলেন। তখন কণ্ব কহিলেন অনস্থয়ে! প্রিয়ংবদে! তোমরা কি পাগল হইলে, তোমরা কোথায় শকুন্তলাকে সান্ত্বনা করিবে, না হইয়া, তোমরাই রোদন করিতে আরম্ভ করিলে।

 এক পূর্ণগর্ভা হরিণী কুটীরের প্রান্তে শয়ন করিয়াছিল; তাহার দিকে দৃষ্টিপাত হওয়াতে,শকুন্তলা কণ্বকে কহিলেন তাত! এই হরিণী নির্ব্বিঘ্নে প্রসব হইলে আমাকে সংবাদ দিবে, ভুলিবে না বল। কণ্ব কহিলেন, না বৎসে! আমি কখনই বিস্মৃত হইব না।

 কয়েক পদ গমন করিয়া শকুন্তলার গতিভঙ্গ হইলে, শকুন্তলা কহিলেন আমার অঞ্চল ধরিয়া কে টানে; এই বলিয়া মুখ ফিরাইলেন। কী কহিলেন বৎসে তুমি জননীর ন্যায় যাহাকে প্রতিপালন করিয়াছিলে, যাহার আহারের নিমিত্ত শ্যামাক আহরণ করিতে, যাহার মুখ কুশের অগ্র ভাগ দ্বারা ক্ষত হইলে ইঙ্গুদীতৈল দিয়া ব্রণ শোষণ করিয়া দিতে, সেই মাতৃহীন হরিণশিশু তোমার গমন রোধ করিতেছে। শকুন্তলা তাহার গাত্রে হস্ত প্রদান করিয়া কহিলেন বাছা! আর আমার সঙ্গে এস কেন, ফিরিয়া যাও, আমি তোমাকে পরিত্যাগ করিয়া যাইতেছি। তুমি মাতৃহীন হইলে আমি তোমাকে প্রতিপালন