বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
শিবাজী

রাগিয়া স্বামীকে বলিলেন, “কি! এই গরীব ভবঘুরে সামান্য ঘোড়সওয়ারের ছেলের সঙ্গে আমার মেয়ের সম্বন্ধ? বিবাহ সমান সমান ঘরেই সম্ভব। তুমি কি অবিবেচনার কাজই করিয়াছ। কেন উহাদের এই অন্যায় কথার উপযুক্ত জবাব দিলে না, এবং ধমকাইলে না?”

মালোজীর সংসারে উন্নতি

 যাদব রাও পরদিনই দুই ভাইকে তাহাদের বেতন চুকাইয়া দিয়া চাকরি হইতে বরখাস্ত করিলেন। মালোজী ও বিঠোজী অগত্যা বিরুল গ্রামে ফিরিয়া আবার চাষ করিতে লাগিলেন। একদিন রাত্রে মালোজী ক্ষেতের শস্য পাহারা দিতেছেন, এমন সময় দেখিলেন, এক গর্ত্ত হইতে একটি বড় সাপ বাহির হইল, আবার তথায় ঢুকিল। মাটির তলে গুপ্তধন প্রাচীন সাপে রক্ষা করে এই বিশ্বাস সেকাল হইতে অনেক দেশে চলিয়া আসিতেছে। মালোজী ঐ গর্ত্ত খুঁড়িয়া সেখানে সাতটি লোহার কড়াই-ভরা মোহর পাইলেন।[১]

 এতদিনে মালোজীর উচ্চাকাঙ্ক্ষা পুরাইবার উপায় জুটিল। ঐ গুপ্তধন চামারা গ্রামের একজন বিশ্বাসী মহাজনের জিম্মায় রাখিয়া, তাহার কিছু খরচ করিয়া ঘোড়া, জীন, অস্ত্র ও তাম্বু কিনিয়া তিনি এক হাজার অশ্বারোহী সৈন্য সজ্জিত করিলেন, এবং তাহাদের নেতা হইয়া ফল্‌টন গ্রামের নিম্বলকর-বংশীয় জমিদারের সহিত যোগ দিয়া

  1. পরে লোকের মুখে ঘটনাটি এই আকার ধারণ করে—“মালোজী বড় দেবদেবীভক্ত গৃহস্থ। একদিন মাঘ মাসের রাত্রে ক্ষেতে পাহারা দিতে দিতে তিনি দেখিলেন যে, মাটির তল হইতে শ্রীদেবী (অর্থাৎ শিবানী) আবির্ভূত হইলেন এবং নিজ জ্যোতির্ম্ময় অলঙ্কার-মণ্ডিত হাত তাঁহার মুখ ও পিঠে বুলাইয়া দিয়া বলিলেন, “বৎস। আশীর্ব্বাদ করিতেছি। এই গর্ত্তটি খুঁড়িলে সাত কড়াই-ভরা মোহর পাইবে। উহা আমি তোমাকে দান করিলাম। তোমার বংশে ২৭ পুরুষ পর্য্যন্ত রাজপদ চলিবে। তোমাদের সব বাঞ্ছা পূর্ণ হইবে।”