বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবাজীর অভ্যুদয়
১৫

লুটপাট আরম্ভ করিয়া দিলেন। অল্পদিনেই তাঁহার ক্ষমতা ও খ্যাতি এত বাড়িয়া গেল যে, অবসন্নপ্রায় নিজামশাহী-রাজা তাঁহাকে সরকারী সৈন্যমধ্যে ভর্তি করিয়া সেনাপতি উপাধি দিলেন। মালোজী আর সাধারণ ঘোড়সোয়ার বা চাষী নহেন, তিনি এখন ওমরা—যাদব রাও-এর সমপদস্থ। তখন যাদব রাও নিজ কন্যার সহিত শাহজীর বিবাহ দিলেন (সম্ভবতঃ ১৬০৪ খৃষ্টাব্দে)।

 ধনবৃদ্ধির সঙ্গে মালোজ অনেক জনহিতকর কাজ ও দানধর্ম্ম করিলেন। মন্দির-নির্ম্মাণ, ব্রাহ্মণ-ভোজন ছাড়া, সাতারা জেলার উত্তর অংশে মহাদেব পর্ব্বতের শিখরে শম্ভু-মন্দিরে চৈত্র মাসে সমবেত লক্ষ লক্ষ যাত্রীর জলকষ্ট নিবারণের জন্য তথায় পাথর কাটিয়া একটি বড় পুষ্করিণী খুঁড়িলেন। মহাদেব তুষ্ট হইয়া স্বপ্নে তাঁহাকে বর দিলেন, “আমি তোমার বংশে অবতীর্ণ হইয়া দেবদ্বিজকে রক্ষা করিব, দক্ষিণ দেশের রাজ্য তোমায় দিব।”

 ধনে মানে বাড়িয়া কালক্রমে মালোজী মারা গেলেন, তাঁহার পর তাঁহার জমিদারী ও সৈন্যদল তাঁহার কনিষ্ঠ ভ্রাতা বিঠোজী চালাইলেন। বিঠোজীর মৃত্যুর পর (অনুমান ১৬২৩ খৃষ্টাব্দে) শাহজী পৈত্রিক সম্পত্তির ভার পাইলেন,এবং ভোঁশলে বংশের সেনাদলের নেতা হইলেন। এই দল এতদিনে বাড়িয়া দু হাজার আড়াই হাজার লোক হইয়াছিল।

শাহজীর অভ্যুদয়

 ১৬২৬ সালে নিজামশাহী রাজ্যের সুদক্ষ মন্ত্রী, মালিক অম্বর আশী বৎসর বয়সে মারা গেলেন এবং তাঁহার পুত্র ফতে খঁ উজীর হইলেন। ইহার এক বৎসরের মধ্যেই দিল্লীর বাদশাহ জাহাঙ্গীর এবং বিজাপুরের সুলতান ইব্রাহিম আদিল শাহও প্রাণত্যাগ করিলেন। দাক্ষিণাত্যে ভীষণ গোলমাল ও যুদ্ধ বাধিয়া গেল।