পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৩৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লহর } মধ্য-মণি । כל 8 כל মহারাজ দেবমাণিক্যের দীক্ষাগুরু লক্ষনীনারায়ণ নামক কপটাচারী ব্রাহ্মণ ... রাজাকে বধ করিয়া, তাহার কনিষ্ঠ পুত্র ইন্দ্রমাণিক্যকে রাজা বিপ্রের ব্যবহার করিলেন ; এবং জ্যেষ্ঠ বিজয়কে হীরাপুর নামক স্থানে *" অবরুদ্ধ করিয়া রাখলেন। ইন্দ্রমাণিক্য শিশু ছিলেন ; তাহার জননীর সহযোগে দুষ্ট ব্রাহ্মণ রাজ্যশাসনে প্রবৃত্ত হইলেন। এই বিপ্ৰ মিথিলা নিবাসী ছিলেন ; তিনি নিজকে নিরাপদ করিবার অভিপ্রায়ে আড়াইশত মৈথিলকে সৈনিক বিভাগে নিযুক্ত করিয়াছিলেন। এই ব্রাহ্মণের অত্যাচারে অল্পকাল মধ্যেই প্রকৃতিপুঞ্জ উত্যক্ত হইয়া উঠিল। প্রধান সেনাপতি দৈত্য নারায়ণ এই সময় গত্যন্তর না দেখিয়া সংহারক মূৰ্ত্তি ধারণ করিলেন। তিনি বেলা দুই প্রহরের সময় দ্বিজ লক্ষীনারায়ণের নিকট চরদ্বারা সংবাদ পাঠাইলেন, রাজমাতা অকস্মাৎ বেদনারোগে অত্যন্ত কাতর হইয়াছেন, র্তাহাকে শীঘ্ৰ আসিয়া না দেখিলে আর দেখিবার আশা থাকিবে না। ব্রাহ্মণ এই সংবাদ পাইয়া ব্যস্তভাবে চতুর্দোলে আরোহণ করিয়া রাজবাড়ীতে যাইতেছিলেন, পথিমধ্যে দৈত্য নারায়ণের নিয়োজিত চরের হস্তে তিনি নিহত হইলেন। অতঃপর সেনাপতি দৈত্য নারায়ণ সদলবলে রাজপুরীতে প্রবেশ ও জননীসহ শিশু ইন্দ্রমাণিক্যকে বধ করিয়া, বিজয়মাণিক্যকে সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত করিলেন। এই সময় মহারাজ বিজয় অল্পবয়স্ক ছিলেন । রাজার শ্বশুর ও প্রধান দৈত্য নারায়ণ স্বয়ং শাসনভার গ্রহণ করিলেন । তিনি নারায়ণের দুর্ব্যবহার রাজাকে অগ্রাহ করিয়া, রাজভাণ্ডারের সমস্ত দ্রব্য, এমন কি হস্তী * "" ঘোড়া, বাদ্য-ভাণ্ড সমস্তই আপন আলয়ে লইয়া গেলেন। রাজা চাহিয়াও কোন বস্তু পাইতেন না ; দৈত্য নারায়ণ বলিতেন,—“আমার মৃত্যুর পরে রাজার সমস্ত বস্তু রাজা লইবেন, তাহাতে কেহ আপত্তি করিবে না।” দৈত্য নারায়ণের ভ্রাতা দুল্লভ নারায়ণ অগ্রজের অমিত প্রভাবে বলীয়ান হইয়া, রাজ্য মধ্যে নানাবিধ উপদ্রব আরম্ভ করিল। র্তাহার বিরুদ্ধে উৎপীড়ন, পরস্ত্রীহরণ ইত্যাদি অভিযোগ রাজদরবারে আসিতে লাগিল, কিন্তু দৈত্য নারায়ণের প্রভাবে মহারাজ কোনরূপ প্রতিকার করিতে সমর্থ হইতেন না। এই অবস্থায় কিয়ৎকাল অতিবাহিত হইবার পর, মহারাজ বয়ঃপ্রাপ্ত (ষোল বৎসর বয়স্ক) হইলেন। তখন তিনি শ্বশুরের আনুগত্যে রাজত্ব করা নিতান্তই অস্পৃহনীয় মনে করিলেন এবং প্রকৃতিপুঞ্জের শান্তিবিধানের নিমিত্তও তাহাকে দমন করা একান্ত কৰ্ত্তব্য বলিয়া বুঝিলেন ; কিন্তু এবম্বিধ শক্তিশালী ব্যক্তির হস্ত হইতে বলপূর্বক রাজকাৰ্য্য অথবা রাজভাণ্ডারের দ্রব্যজাত কাড়িয়া লওয়া নিতান্তই অসম্ভব বিবেচিত হওয়ায়, তাহাকে নিহত করিয়া সর্বববিধ বাধাবিল্প উন্মোচন করাই মহারাজ সঙ্গত মনে করিলেন । তিনি দৈত্য নারায়ণের জ্যেষ্ঠ কন্যার জামাতা মাধবকে ভূষণার লস্কর পদ প্রদানের আশ্বাসদ্বারা বশীভূত করিয়া, কাৰ্য্যোদ্ধার করিলেন। মাধব, দৈত্য নারায়ণকে