বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শ্রীশ্রীগৌরসুন্দর - শ্যামলাল গোস্বামি.pdf/৩২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

N9S শ্ৰীশ্ৰীগৌরসুন্দর ভক্তগণকে ক্লান্ত দেখিয়া -কীৰ্ত্তন বন্ধ করিলেন। তখন প্রভুর ভাবাবেশ ও বাহানুসন্ধান হইল। প্ৰভু বাহাদৃষ্টি লাভ করিয়া ভক্তগণের সহিত পুষ্পোপ্তানে গমনপূর্বক কিয়ৎকাল বিশ্রামের পর মধ্যাহ্নস্নানাদি সমাপন করিলেন। এই সময়ে জগন্নাথের ও লক্ষ্মী দেবীর প্রচুর প্রসাদ আসিয়া উপস্থিত হইল। প্ৰভু ভক্তগণের সহিত ভোজন করিয়া ক্ষণকাল বিশ্রাম করিলেন । সায়ংকাল সমাগত হইল। প্ৰভু সন্ধ্যাকালীন স্নান সমাধা করিয়া ভক্তগণের সহিত জগন্নাথ দৰ্শন করিলেন । এইরূপে আট দিন কাটিয়া গেল। নবম দিবসে জগন্নাথের পুনৰ্যাত্ৰা হইল। প্ৰভু ভক্তগণের সহিত পূর্ববৎ রথাগ্ৰে নৰ্ত্তনকীৰ্ত্তন করিতে করিতে পুনর্বার নীলাচলে আগমন করিলেন। পুনর্ধাত্রার দিন জগন্নাথের একটি রজ্জ্ব ছিন্ন হইল। তদর্শনে প্ৰভু ঐ ছিন্ন রজ্জ্বটি দিয়া কুলীনগ্রামের রামানন্দ ও সত্যরাজকে বলিলেন, “আগামী বৎসর হইতে তোমরা জগন্নাথের বন্ধনার্থ ইহা অপেক্ষা দৃঢ় রজ্জ্ব নিৰ্ম্মাণ করিয়া আনিবে।” রামানন্দ ও সত্যরাজ প্রভুর সেবাদেশ পাইয়া আপনাদিগুকে কৃতাৰ্থ মনে করিলেন, এবং প্রতিবৎসর রজু। নিৰ্ম্মাণ করিয়া আনয়ন করিতে লাগিলেন । রথযাত্ৰা চলিয়া গেল। গৌড়ের ভক্তগণ চাতুৰ্ম্মাস্তের চারিমাস পুরুষোত্তমক্ষেত্রেই বাস করিলেন। প্ৰভু প্ৰতিদিন প্ৰাতঃকালে জগন্নাথ দৰ্শন করেন। উপন ভোগ অর্থাৎ অন্নব্যাতিরিক্ত অন্যান্য দ্রব্যের ভোগ সরিয়া গেলে মন্দির হইতে বাহির হইয়া হরিদাসকে দর্শন দেন। পরে বাসায় যাইয়া নামসঙ্কীৰ্ত্তন করেন। এই সময়ে অদ্বৈতাচাৰ্য্য আসিয়া পুষ্পচন্দনাদি দ্বারা প্রভুর পূজা করিয়া থাকেন। কোন কোন দিন প্ৰভু আবার সেই সকল দ্রব্য, দ্বারা আচাৰ্য্যকেও পূজা করেন। আচাৰ্য্য মধ্যে মধ্যে প্রভুকে নিমন্ত্ৰণ করিয়া ভিক্ষা দেন। অপরাপর ভক্তসকলও বিশেষ আগ্ৰহ করিয়া এক এক দিন প্ৰভুকে ভিক্ষা করাইয়া থাকেন। এইরূপে জন্মাষ্টমী আগত হইল। প্ৰভু নন্দোৎসবের দিন ক্তগণের সহিত গোপবেশ ধারণপূর্বক ভার স্কন্ধে করিয়া ও লগুড় ফিরাইয়া ভক্তগণের আনন্দ বিধান করিলেন। পরে বিজয়াদশমী উপস্থিত হইলে, ভক্তগণের সহিত লঙ্কা বিজয়লীলা করিলেন। ঐ দিবস, প্ৰভু স্বয়ং হনুমানের ভাবে আবিষ্ট হইয়া বৃক্ষশাখা লইয়া লঙ্কার দুর্গভঞ্জনরূপ অদ্ভুতলীলা প্ৰকাশ করিয়া ভক্তগণকে যথেষ্ট আনন্দ দিলেন । এইরূপে দীপাবলী, উখানদ্বাদশী ও রাসযাত্ৰা অতিবুহিত হইল ।