পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ : ৪৯ সব্বদা নাড়ার দরুন অলংকারের শব্দ হইতেছে। প্রমদার মাতা দেখিয়া শুনিয়া একবারে অবাক হইয়া রহিলেন । প্রমদার মাতা সম্মুখ-সমরে সাহায্য করিতেন । কিন্ত শ্যামার বিক্ৰম দেখিয়া তাঁহার ভরসা হইল না । তিনি এক্ষণে তনয়ার নিকটে বলিতে লাগিলেন—“মা, স্থির হও, স্থির হও । শিখান না থাকলে কি ছোটলোকের মুখে এ সব কথা বেরোয়, তলে তলে টিপনি আছে, তা ত তুমি টের পাও না। আজ বাড়ী এলে সব বলে দিও। দেখ তিনি কি বলেন। রাপারে বাপ, আমার ত আর এ বাড়ী তিলাধ থাকতে ইচ্ছা করে না । কবে আমাকেই কি ব’লে বসে ?” প্রমদার মাতার কথা শেষ না হইতে হইতেই গদাধরচন্দ্র কোথা হইতে আসিয়া উপস্থিত হইলেন । প্রমদাকে রাগত দেখিয়া ও জননীর মুখে উলিখিত কথা শুনিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “ডিডি-কি হয়েছে ?" ডিডি কথা কহিলেন না । গদাধর পুনরায় জিজ্ঞাসা করিলেন, “ডিডি, কি হয়েছে ?” প্রমদা উত্তর করিলেন, “যা যা, এখন ঐ দিকে যা, কোথাকার গডম:খটা, তোর যদি বধি সাধি থাকতো, তা হ’লে তোর অদটে এত দুঃখ হবে কেন ?" গদাধরচন্দ্র অজ্ঞান ! তার কপালে কি দুঃখ ? তার বিশ্বাস, ক্রমেই তার সুখ বন্ধি হচ্ছে । দিদির বাটী এসে পৰ্য্যন্ত ত আহার-আদি ভালই হচ্ছে, তবে আবার অসুখ কি ? এই ভাবিয়া গদাধর ব্যাকবের মত ফ্যাল ফ্যাল করিয়া চাহিতে লাগিলেন । গদাধরের মা সমুদায় কহিলেন । গদাধর শুনিয়া কম্পমান হইয়া কহিলেন, “চলাম আমি, ডেখি ও মাগীর কট প্রটাপ !” এই বলিয়া লাঠি হাতে করিয়া গদাধর সরলার ঘরের দিকে অগ্রসর হইলেন ; “আয় বেটী আয়, ডেখি টোর কট জোর, আর কার প্রটাপে টাই লড়িসা ।” প্রমদা নিষেধ করিলেন না । গদাধরের মাও না। তাঁহারা ভাবিলেন, যদি দু ঘা এক ঘা দিতে পারে, ভালই । সরলা গদাধরের আস্ফালন শুনিয়া বার রন্ধ করিতে গেলেন, শ্যামা কোন মতেই দরজা বন্ধ করিতে দিল না । গাহের কোণ হইতে তরকারি কোটা একখানা ব’টি হতে লইয়া বারে দাঁড়াইয়া কহিল, “কোথায় সে ন্যাজকাটা বামন ? আয় আজ তোর নাক কান না কেটে যদি আমি জল খাই, তবে আমার নাম শ্যামাই मम !” ব'টির চোকাল ধার দেখিয়া গদাধরের আর ভরসা হইল না । দীর হইতে কহিলেন, “টই আমাকে কাটবি, এই চললাম আমি ঠানায় ? ডারগা বকশী ডেকে আনি ।" শ্যামা । যা তই যেখানে ইচ্ছা সেইখানে । গিয়ে যা করতে পারিস তা করিস । থানা সেই গ্রামেই। গদাধরের থানার এক কনটেবলের সহিত আলাপ ছিল । সবণলতা-৪