পাতা:ঋষি রবীন্দ্রনাথ - অমলেন্দু দাশগুপ্ত (১৯৫৪).pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঋষি রবীন্দ্রনাথ
১০৫

অধিকার এবং সংযোগ দুই-ই আমাদের ছিল, তাহারও যুক্তি আমরা দেখাইয়াছি, যদিও কার্যকালে রবীন্দ্র-রচনাবলী বিচারক্ষেত্রে আনীত হয় নাই।

 রবীন্দ্রনাথ ব্রহ্মজ্ঞ ঋষি, ইহা প্রমাণ করিতে পারা গিয়াছে কি না, সে প্রশ্নের উত্তর দিবার দায়িত্ব আমাাদের নহে। রবীন্দ্রনাথ ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ, ইহাই আমরা ঘোষণা করিয়াছি এবং ঘোষণার সমর্থনে প্রমাণ ও যুক্তিও কিছু উপস্থাপিত করিয়াছি। আমাদের কর্তব্য এবং প্রচেষ্টা এই পর্যন্তই।

 ইহার পরেও যে প্রশ্ন, আলোচনা ইত্যাদি দেখা দিবে, আমাদের দিক দিয়া তাহা অবান্তর। অবশ্য, আমাদের প্রদত্ত প্রমাণ, যুক্তি ইত্যাদির স্বপক্ষে বা বিপক্ষে প্রমাণ, যুক্তি ইত্যাদির অবকাশ নিশ্চয়ই রহিয়াছে, ইহা আমরা স্বীকার পাই। তবু তাহা আমাদের দিক দিয়া বাহুল্য, কারণ আমাদের প্রচেষ্টা ও কর্তব্যের যেখানে স্বাভাবিক পরিসমাপ্তি, সেখানেই আসিয়া আমরা উপনীত হইয়াছি। অতঃপর শক্তিমান ও অধিকারী পুরুষগণ ইহার পরেও অগ্রসর হইবেন, ইহাই আমরা কামনা করি।

 রবীন্দ্রনাথ ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ এই কথাটিই শুধু আমরা উপস্থিত করিয়াছি। মনীষী পুরুষগণ কথাটিকে তাঁহাদের বিচার ও আলোচনার বিষয়বস্তুররূপে গ্রহণ করিবেন, ইহাই ছিল আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। তাই কথাটি যথাশক্তি এবং যথাসংক্ষেপে পেশ করিবার পর আমাদের কর্তব্য সমাপ্ত হইয়াছে বলিয়াই আমরা মনে করি।

 উপসংহারে বিশেষ একটি বিষয়ের আলোচনা করিতে আমরা বাধ্য হইতেছি। আলোচ্য বিষয়টি অবশ্য অপ্রাসঙ্গিক নহে, তবুও না তুলিলে কোন ক্ষতি ছিল না। তত্রাচ বিষয়টি যখন উত্থাপিত হইয়াছে, তখন তাহা প্রত্যাখ্যান করা সমীচীন হইবে না।

 আমাদের অলোচনা কিছুদূর অগ্রসর হইবার পর অনেকেই প্রশ্ন করিয়া পাঠাইয়াছেন—রবীন্দ্রনাথের ব্যক্তিগতজীবন ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষের জীবন কি?

 বুঝিতে কষ্ট হয় না যে, ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ, মুক্তপুরুষ, মহাপুরুষ, মহাযোগী ইত্যাদি বলিতে প্রশ্নকর্তাদের মনে যে ধারণা আছে, রবীন্দ্রনাথের ব্যক্তিগত জীবন তাহার সঙ্গে খাপ খায় না, ইহাই তাঁহাদের অভিমত বা সিদ্ধান্ত।

 এই সিদ্ধান্ত সত্য বলিয়া মানিয়া লইলেও ‘রবীন্দ্রনাথ ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ’ এই ঘোষণার কোন ইতরবিশেষ ঘটে না। ঘরের সব কয়টা বাতি সাদা আলো দেয়