পাতা:জীবন্মৃত রহস্য - পাঁচকড়ি দে.pdf/৩০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিচারের ফল RN গঙ্গারাম, জুলেখাকে ধৃত করা যতটা সহজ মনে করিতেছেন, সুচতুরা জুলেখাকে যাহারা প্রকৃতরূপে চিনিয়াছেন, তাহারা ঠিক ততটা সহজ মনে করিতে পরিবেন না। দত্ত সাহেব এই কয়েক দিনে জুলেখার সম্পূর্ণ পরিচয় জ্ঞাত হইয়াছেন ; জুলেখা যে আর কখনও ধরা পড়িবে না, সে বিষয়ে তিনি কৃতনিশ্চয় হইতে পারিলেন। জুলেখা এখন টম্বরু হস্তগত করিয়াছে-এইবার সে নিশ্চয়ই একেবার নিজের দেশে ছোটনাগপুরে গিয়া উঠিবে ; সেই বন্য প্রদেশ হইতে তাহাকে খুজিয়া বাহির করা কিছুতেই সম্ভবপর নহে। আজ একবারও দত্ত সাহেব বাটীর বাহির হন নাই। যে ঘরে অমরেন্দ্ৰনাথের মৃতদেহ রাখা হইয়াছিল, কখন বা সেই ঘরে গিয়া শোকা শ্রী বর্ষণ করিতেছেন, কখনও বা লাইব্রেরী ঘরে আসিয়া প্ৰকৃতিস্থ হইবার চেষ্টা করিতেছেন। আবার পরীক্ষণে উঠিয়া গিয়া অমরেন্দ্রের প্রস্তরকঠিন দেহ বুকে টানিয়া তুলিবার চেষ্টা করিতেছেন। যেমন একদিন সুরেন্দ্ৰনাথের মৃতদেহ বস্ত্ৰাচ্ছাদিত হইয়া একটি ক্ষুদ্ৰ শয্যার উপর পড়িয়াছিলআজ অমরেন্দ্রনাথের মৃতদেহ ও সেই ক্ষুদ্র শয্যায় ঠিক সেইরূপ ভাবে পড়িয়া। যে বিভীষিকা নাটকের যেরূপ” শোচনীয় প্রস্তাবনা-দৃশ্যের মাঝখানে একদিন যবনিকা উঠিয়াছিল, দত্ত সাহেবের হৃদয় দ্বিধা করিয়া আজ সেই নাটকের তেমনই একটা ভয়ানক শোকাবহ শেষাদৃশ্যের মাঝখানে যবনিকাপাত হইতেছে।