পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ।

প্রথমে বলিয়াছিলেন, “মা দিয়াছিলেন, মা'ই লইয়াছেন; পূজা বন্ধ করিব না।” কিন্তু পরে অপরের অজ্ঞাত কোনও কারণে তাঁহার বিশ্বাস জন্মে, পূজা বন্ধ হওয়াই দেবীর অভিপ্রেত।

 পিতার মৃত্যুর পর শিবচন্দ্র ও নবীনচন্দ্র দেখিলেন, পৈত্রিক সম্পত্তির আয়ে সংসারের আবশ্যক ব্যয়ের নির্ব্বাহ হওয়াই দুষ্কর; জীর্ণ গৃহের সংস্কারাদির ব্যয় আসিবে কোথা হইতে? পূজা পার্ব্বণ বন্ধ হইল,—চণ্ডীমণ্ডপের তক্তপোষ আর উঠে না। সঙ্কীর্ণ আয়ে নানারূপ ব্যয়ের সঙ্কুলান হয় না।

 এই সময় পিতামাতার অপেক্ষাকৃত অধিক বয়সে—শিবচন্দ্রের পুত্র প্রভাতের জন্ম হইল। আর অতর্কিতভাবে— অপ্রত্যাশিত পথে কমলার কৃপা দত্তদিগের জীর্ণগৃহে প্রবেশ করিল। শিবচন্দ্রের জ্যেষ্ঠা ভগিনীর শ্বশুর ব্যবসায়ে বিশেষ সঙ্গতিপন্ন হইয়াছিলেন। দারুণ বিসূচিকায় তাঁহার ও পর দিবস তাঁহার পুত্রের মৃত্যু ঘটে। তাঁহার পত্নী কাশীবাসিনী হইবার ইচ্ছা করিলে বিধবা পুত্রবধূই বলিলেন, “মা, ভিটা যে শূন্য হইবে!” শেষে উভয়ে যুক্তি করিয়া এক জ্ঞাতিপুত্রকে আনিয়া পালন করিলেন। কিন্তু পতিপুত্রশোকে শাশুড়ীর শরীর ভাঙ্গিয়া গিয়াছিল,—বৎসর ফিরিতে না ফিরিতেই তাঁহার মৃত্যু হইল। বধূ জ্ঞাতিপুত্রকে লইয়া শ্বশুরের ভিটায় বাস করিতে লাগিলেন। শিবচন্দ্রের যখন পুত্রলাভ হইল, তাহার অব্যবহিত পূর্ব্বেই তাঁহার জ্যেষ্ঠা ভগিনীর সেই পালিত জ্ঞাতি-

১৭