পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ।

পুত্রের মৃত্যু হইয়াছে। তিনি তখন অগত্যা শ্বশুরের গৃহ ত্যাগ করিয়া পিত্রালয়ে আসিলেন।

 পিসীমা'র অর্থ তাপতপ্ত ধরাবক্ষে নিদাঘদিনান্তের স্নিগ্ধ বর্ষণের মত দত্তগৃহে বর্ষিত হইল। বিষয়বুদ্ধিসম্পন্ন শিবচন্দ্র পৈত্রিক গৃহের কতক অংশ ভাঙ্গিয়া অবশিষ্ট অংশের সংস্কার করিয়া লইলেন, এবং অর্থের সুযোগমত ব্যবহারে আয়ের পথ প্রশস্ত করিলেন।

 প্রভাত পিসীমার শূন্য অঙ্ক ও শূন্য হৃদয় পূর্ণ করিল। তাহাকে লইয়া পিসীমার আর বিশ্রাম রহিল না। এমন কি, তিন বৎসর পরে, দুইটি মৃতসন্তান প্রসবের পর নবীনচন্দ্রের পত্নী যখন কমলকে প্রসব করিয়া দারুণ সূতিকায় শয্যাশায়িনী হইলেন, তখনও প্রভাত পিসীমার অঙ্কের মৌরশী পাট্টা আগুলিয়া রহিল। কোনও কোনও লতিকা যেমন ফললাভের সঙ্গে সঙ্গে শুকাইয়া যায়, নবীনচন্দ্রের পত্নীও তেমনই কমলের জন্মের চারি মাস পরে জীর্ণদেহ ত্যাগ করিলেন। কমলের প্রতি যে পিসীমার স্নেহ ছিল না, এমন নহে; তবে প্রভাত তাঁহার প্রিয়তম। কমল জ্যোঠাইমা'র অঙ্ক অধিকার করিয়া লইল, জ্যেষ্ঠতাতের ‘মা’ হইয়া দাঁড়াইল।

 নবীনচন্দ্র আর বিবাহ করেন নাই। শিবচন্দ্রেরও অন্য সন্তান হয় নাই।

 যথাকালে শুভদিনে প্রভাতের হাতে-খড়ি হইয়া গেল। কিন্তু প্রথম প্রথম তাহাকে পড়ান লইয়াই বিপদ উপ-

১৮