পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Հ.8Հ বৃদ্ধ রক্ষক বহির হইয়া আসিল । সে কহিল, “ৰাষ্ট্ৰীওয়াল ধনী অধিক দূরে থাকেন না— তাহার অনুমতি লইয়া আসিলেই এ বাড়ীতে বাস করিতে দিতে পারি।” বিনোদিনী মহেঞ্জের মুখের দিকে একবার চাহিল। মহেন্দ্র এই মনোরম বাড়ীটি দেখিয়া লুব্ধ হইয়াছিল—দীর্ঘকাল পরে কিছুদিন স্থিতির সম্ভাবনায় সে প্রফুল্প হইল - বিনোদিনীকে কহিল, “তবে চল সেই ধনীর ওখানে যাই, তুমি বাহিরে গাড়িতে অপেক্ষা করিবে, আমি ভিতরে গিয়া ভাড়৷ ঠিক করিয়া আসিব ।” বিনোদিনী কহিল, “আমি আর ঘুরিতে পারিব ন—তুমি বাও, আমি ততক্ষণ এখানে বিশ্রাম করি । ভয়ের কোন কারণ দেখি না।” মহেন্দ্র গাড়ি লইয়া চলিয়া গেল। বিনোদিনী বুড়া ব্রাহ্মণকে ডাকিয় তাহার ছেলেপুলের কথা জিজ্ঞাস করিল—তাহার কে, কোথায় চাকরি করে, তাহার মেয়েদের কোথায় বিবাহ হইয়াছে ? তাহার স্ত্রীর মৃত্যুসংবাদ শুনিয় করুণস্বরে কছিল— “আহা ! তোমার ত বড় কষ্ট ! এই বয়সে তুমি সংসারে একলা পড়িয়া গেছ ! তোমাকে দেখিবার কেহ নাই!” তাহীর পরে কথায় কথায় বিনোদিনী জিজ্ঞাসা করিল, “বিহারিবাবু এখানে ছিলেন না ?” . বৃদ্ধ কছিল, “ই, কিছুদিন ছিলেন ত বটে। মাজি কি তাহাকে চেনেন ?” বিনোদিনী কহিল, “তিনি আমাদের अॉब्लैौङ्ग झन ।” [ २झ अंश्ंलं বিনোদিনী বৃদ্ধের কাছে বিহারীর নির্গ ও বর্ণনা যাহা পাইল, তাহাতে আর মনে কোন সন্দেহ রহিল না। বুড়াকে দিয়া দ্বর পুলাইয়া বোন ঘরে বিহারী গুইত, কোন ঘর তাহার বসিবার ছিল, তাহ সমস্ত জানিয়৷ লইল । তাছার যাওয়ার পর হইতে ঘরগুলি যে বন্ধ ছিল, তাহাতে মনে হইল, যেন সেখানে অদৃশু বিহারীর সঞ্চার সমস্ত ঘর ভরিয়া জমা হইয়া আছে, হাওয়ায় যেন তাহা উড়াইয়া লইয়৷ যাইতে পারে নাই । বিনোদিনী তাছা ভ্রাণের মধ্যে হৃদয় পূর্ণ করিয়া গ্রহণ করিল, স্তন্ধ বাতাসে সৰ্ব্বাঙ্গে স্পশ করিল। কিন্তু বিহারী যে কোথায় গেছে, সে সন্ধান পাওয়া গেল না। হয় ত সে ফিরিতেও পারে,—স্পষ্ট কিছুই জান। নাই । বৃদ্ধ তাহার প্রভুকে জিজ্ঞাসা করিয়৷ আসিয়া বলিবে, বিনোদিনীকে এরূপ আশ্বাস দিল । আগাম ভাড়া দিয়া বাসের অনুমতি লঙ্কয়। মহেন্দ্র ফিরিয়া আসিল । ( ¢२ ) হিমালয়শিখর যে যমুনাকে তুষারক্রত অক্ষয় জলধারা দিতেছে, কতকালের কবির মিলিয়৷ সেই যমুনার মধ্যে যে কবিত্ত্বস্রোত ঢালিয়াছে, তাছাও অক্ষয় । ইহার কলধ্বনির মধ্যে কত বিচিত্র ছন্দ ধ্বনিত এবং ইহার তরঙ্গলীলায় কতকালের পুলকোচ্ছসিত ভাবাবেগ উদ্বেলিত হইয়া উঠিতেছে! প্রদোষে সেই যমুনাতীরে মহেন্দ্র আসিয়া যখন বসিল, তখন ঘনীভূত প্রেমের আবেশ তাহার দৃষ্টিতে, তাছার নিশ্বাসে, তাহার শিরায়, তাহাঁর অস্থিগুলির মধ্যে প্রগাঢ়