পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

לאצ করি, হাড়ে-ছাড়ে অঙ্গভব করি কিন্তু তবুও জাতীয়জীবন ও জাতীয় উদ্বেপ্তের জন্ত প্রাণ পীত করিতে প্রস্তুত থাকিয়া, সমস্ত ব্যক্তিগত সম্বন্ধে মনকে সকল ক্ষুদ্রতা, সকল মলিনত, সকল পাপচিত্ত হইতে অনেক উন্ধে রাখতে আমাদের ধর্ম কি আমাদিগকে আশীৰ্ব্বাদ করিবেন না ? ইহা ভিন্ন নিষ্কামধৰ্ম্মের আর কি অর্থ, তাহ আমি জানি না। এ প্রসঙ্গে কচ-দৈত্যগুরুর কথা না ভাবিয়া অৰ্জুন ও ভীয়দ্রোণের সঙ্গে কি সম্বন্ধ, সকলে একবার ভাবিয়া দেখুন। এই প্রসঙ্গে আর একটা কথাবলিতে ইচ্ছা করে। কিছুদিন হইতে কাহারও কাহারও মুখে শুনিয়া আসিতেছি যে, রাজনৈতিক আন্দোলন-একটা ভিক্ষ ; যাহার একথার প্রতিবাদ করিবেন ভাবিয়াছিলাম, অল্পে অল্পে র্তাহাদের ভিতরেও যেন এই ভাবের অল্পাধিক সঞ্চার হইতেছে বলিয়া মনে হয় ; কিন্তু আমার আজও কথাটা হৃদয়ঙ্গম হইল না। অবষ্ঠ ভিক্ষাবৃত্তি যদি আমাদের মনে থাকে,--- আমাদের প্রকৃতিগত হয়, তবে আমাদের রাজসিংহাসনে বসাইয়া দিলেও আমরা ভিক্ষাই করিব। নতুবা রাজনৈতিক আন্দোলন ভিক্ষ নয়। ইহা নিরস্ত্র সংগ্রাম। ইহাতে রাজশক্তি ও প্রজাশক্তির সমস্ত অথবা অংশবিশেষের সহিত যুক্তিবলের সংঘর্ষে দেশের রাজনৈতিক-ব্যবস্থা-সম্বন্ধে যাহা স্থায়সঙ্গত, তাহাকে পরিস্ফুট করিয়া তোলে ; অবস্থাবিশেষে ইহাতে কোন দৃপ্তমান সম্ভোলাভ না থাকিলেও ইহাতে লৈাকশিক্ষাবিস্তারের সহায়তা করিয়৷ প্রজাপুঞ্জের চিন্তাশক্তিকে আপনার মন্ত্ররূপে গঠিত করিয়া তুলিয়া স্থা ও সত্যের দিককে পরিপুষ্ট করে ; এবং অবশেষে স্বাধীনচিন্তাশীল বিস্তীর্ণ প্রজাপুঞ্জুের চিত্তা ও ভাবের সহিত রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে আপনার সামঞ্জস্ত । করিয়া লইতে বাধ্য করে। যে ইহার মৰ্ম্ম বোঝে, শত পরাজয়ে তাহার আগ্রহকে ঘনীভূত করিয়া দেয় অথবা তল্লকে নিরাশ করিতে পারে, কিন্তু কখন অভিমান আনিয়া দেয় না। যোদ্ধ, যেমন যোদ্ধার উপর অভিমান করিতে পারে না, রাজনৈতিকআন্দোলনকারীর তেমনি অভিমান অসম্ভব। নিষ্কমকৰ্ম্মে যে ব্ৰতী, তার আবার অভিমান কি ? পাশ্চাত্যজাতির গীত পড়ে নাই, কিন্তু তাহীদের জাতীয়ভাব তাহাদিগকে নিষ্কামধৰ্ম্মের এক অংশের • অধিকারী করিয়াছে। রাজনৈতিক অধিকার লক্ষ্য হইলে, শত পরাজয়েও রাজনৈতিক আন্দোলন ভিন্ন অন্ত উপায় নাই। অবশু রাজনৈতিক অধিকার একেবারে ছাড়িয়া-দিয়া, বর্তমান সময়ে জাতীয় জীবন ও উন্নতি সম্ভব কি না, এ বিচার কেহ কেহ করিতে পারেন। • স্বার যদি সিদ্ধান্ত হয় যে, তাহ সম্ভব নয়, তুবে যাহার রাজনৈতিক আন্দোলনের মৰ্ম্ম বোঝেন ন,তাহারা আপনার আপনার জীবনের বিশেষ ব্ৰতকে অতিক্রম করিয়া, র্যাহারা এ মৰ্ম্ম বোঝেন, তাদের মনে কেৱল সমূেহ ও দ্বিধা উৎপাদনের প্রয়াস করিলে, দেশের কি কোম কল্যাণ হইবে ? সকল সমস্তার ভিতরের কথা এই বিদ্বেষ, স্বণ, ক্ষোভকে শুশ্ৰং মা দিয়া তপস্বীর বন্ধ সম্ভব, কিন্তু ক্ষত্রিয়ের ধৰ্ম্ম"কি সম্ভব ? ইহারই উত্তর দিবার জন্ত গীতাশাস্ত্র। কিন্তু কেবল গীত পড়িয়া কেহ কোনদিন এই উত্তর বুঝে