পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম সংখ্যা। ] দেবনাগর এবং বঙ্গক্ষেরের একত্ব t సీసీ ছিলনা। সাধারণের লেখাপড়ার কাৰ্য্যের নিমিত্ত অন্তপ্রকার অক্ষর প্রচলিত ছিল, উক্ত প্রাচীন অক্ষরসকল সেই অক্ষর। ক্রমে দেবনাগর একটি-দুইটি করিয়া তাহাতে প্রবেশ করাতে সেই প্রাচীন অক্ষর কালক্রমে অপস্থত হইয়াছে। এক্ষণে সাহিত্যে অর্থাৎ সংস্কৃতে দেবনাগর এবং প্রচলিত লেখাপড়াতে বাঙলাতে বঙ্গাক্ষর ব্যৱহৃত ছুইতেছে । ইহারা উভয়ে মূলত এক হইয়াও ই আকারে দুই ভাবে ব্যবহৃত হইতেছে। উপরে দেখিতে পাইয়াছি যে, খ্ৰীঃ পূঃ ৩০০ অব্দে প্রাচীন অক্ষরের একতৃতীয়াংশ দেবনাগরী দ্বারা বিচু্যত এবং ১১০০ খ্ৰীষ্টাব্দে সম্পূর্ণভাবে তিরোহিত হইয়াছিল। খ্ৰীঃ পুঃ ৩০০ অব্দ হইতে খ্ৰীঃ ১১০০০ পৰ্য্যন্ত চৌদশত বর্ষে যদি দুইতৃতীয়াংশের পরিবর্তন হইয়া থাকে, তবে একতৃতীয়াংশ পরিবর্ভূিত হইতে সাতশত বর্ষ লাগিয়াছিষ্টা বলিয়া ধরা যায়। তাহা হইলে খ্ৰীঃ পূঃ ১০০০ দশশত অব্দে দেবনাগর অক্ষর চলিত ভাষায় প্রবেশ করিতে আরম্ভ করিয়াছিল এবং তৎপূৰ্ব্বে উহ কেবল ধৰ্ম্মপুস্তকেই নিবদ্ধ ছিল । ধৰ্ম্মপুস্তকে কতকাল নিবদ্ধ ছিল, তাহা এখন পর্য্যস্ত অক্ষরদ্বারা প্রমাণ করার উপায় নাই। আমরা যেমন ভাষাদ্বারাই ভাষার আদিভাব নির্ণয় করিতে প্রয়াস পাইতেছি, • তেমনি অক্ষরের বয়সও অক্ষরের দ্বারাই নির্ণয় করিতে চেষ্টা করিলাম । তাহাতে নুনিকল্পে খ্ৰীঃ পূঃ ১০০০ বৎসর ভাবে কেবলমাত্র ধৰ্ম্মপুস্তকে কতকাল নিবন্ধ ছিল, তাহ অক্ষরঞ্জার নির্ণয় করা যায় নু, তাহা অন্ত উপায়ে কালক্রমে জানা যাইতে পারে । 蠟 - কোন জাতি সভ্যতার সোপানে সমারূঢ় হইলেই তাহদের মধ্যে লিখনপ্রণালী সমুদ্ভূত না হইয়া থাকিতে পারে না; কোন বিষয়ের অভাববোধ হইলেই তাহার পূরণ করিবার উপায় আবিষ্কৃত হয়। যখন সমাজে জ্ঞানের ও সাহিত্যের উদ্ভব হয়, তখনি তাহর লিপি করার প্রয়োজনবোধ হইয়া থাকে এবং তাহাতেই লিখনপ্রণালীর স্বষ্টি হয়। ভূমিতে নানাপ্রকার বীজ নিহিত থাকে, তাহা দেখিতে পাওয়া যায় না এবং জানিতেওঁ পারা যায় না, কিন্তু বৰাগমে তাহারা আপনা হইতেই অঙ্কুরিতু হইয় প্রকাশিত হয়। তখন তাহাদের উদ্ভব যেমন হইতেই হইবে, সমাজমধ্যে জ্ঞান ও সাহিত্যের বিকাশ হইলে লিখনপ্রণালীর আবিষ্কারও সেইপ্রকার অবশুম্ভাবী। সত্যুতার কতদূর উন্নতি হইলে পর এ দেশে লিখনপ্রণালী প্রচলিত হইয়াছিল, তাহা দুইটিশ দ্বারা আমরা জানিতে পারিতেছি ; সেই দুইটি শব্দ “পত্র” এবং “খড়ী” । ইহাদের দ্বারা জানা যায় যে, যখন আমরা প্রথম লিখিতে শিখিয়াছিলাম, তখন - খড়ীদ্বারা বৃক্ষপত্রে লিপি করিতাম। সুতরাং - সভ্যন্ত্রর অতি আদিম অবস্থায় যে আমরা লিখিতে আরম্ভ করিয়াছি, তাহা ভাষাতত্বে ভাষাদ্বারাই পৰ্যন্ত পাইতেছি, তৎপূর্বে উহ অপ্রকাশিত - প্রমাণিত হইতেছে।' ' இ ঐশ্ৰীনাথ সেন। _ம்