বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԵ ভগ্নাতকুলশীল অতিথিকে আপন ঘরেস্থান দিতে ভারতবাসী কষ্মিনকালে কুষ্ঠাবোধ করে নাই। দক্ষিণ আফ্রিকাতে আমাদের যে সকল ইম্পিরিয়ালিষ্ট ভ্রাতা বাস করেন, ইম্পিরিয়ালযজ্ঞে আলস্তনের জন্ত ভারতবর্ষের পশু সংগ্ৰহ করিতে তাঁহাদের আপত্তি নাই, কিন্তু সেই পশুগুলির ঘাসজলের ব্যবস্থার জন্ত দুইকাঠা জমি ছাড়িয়াদিতে র্তাহারা বড়ই কাতর। দক্ষিণআফ্রিকাবাসী ইংরেজের আমাদের কিরূপ সংবৰ্দ্ধনা করেন, তাহা আমরা সকলেই জানি । তাহাদের যে সকল মাস্তুত ভাই অষ্ট্রেলিয়ায় বাস করিতেছেন,তাহদেরও কুটুম্বিতারীতি আমাদের অবিদিত নাই। ভারতবাসীর ব্যবহার এ বিষয়ে সম্পূর্ণ বিভিন্ন। দিল্লীর বাদশাহ যদি সার টমাস রোকে আতিথ্য-অনুগ্রহ-বিতরণে একটু কার্পণ্য করিতেন, তাহা হইলে তাহার ভবিষ্যৎ বংশধরকে দিল্লীর রাজপথে হডসনের পিস্তলের গুলিতে জীবনদান করিতে হইত না । সে বাহাই হউকৃ, বিদেশের সামগ্ৰী গ্রহণ করিতে আমাদের কোনকালেই ঔদার্য্যের অভাব ছিল না। বিদেশের সকল বীজ এদেশের ক্ষেতে ধরে না, কোন-কোনটা বেশ ধরিয়া বায়,— ইংলণ্ডেশ্বর প্রথম জেমূসের প্রেরিত বীজট অত্যন্ত উৎকৃষ্টরূপে ধরিয়া গিয়াছে। কোনকোন বীজ ফলাইবার জন্ত চাষের প্রণালীকে ক্ষেতের অনুযায়ী কুরিয়া লইতে হয়। নবেলের বীজ ও মীসকপত্রিকার বীজ বঙ্কিমচন্দ্রের পূৰ্ব্বেই আসিয়াছিল ;–র্যাহারা উহার আমদানি করিয়াছিলেন, তাহারা উহ। ফুলাইতে পারেন নাই । বঙ্কিমচন্দ্ৰ যেদিন চাষের ভার গ্রহণ করিলেন, সেইদিন উহা জমিতে লাগিয়া গেল; এখনৃ- উহার শস্তসম্পত্তিতে স্বজলা স্বফল৷ বঙ্গদর্শন । -o t૭ જૂનાર বঙ্গধরিত্রী ভারাক্রান্ত হইয়া পড়িয়াছেন বলিলেও অত্যুক্তি না। আফিম এবং তামাক, এই দুই উপাদয় ফসল এদেশের জমিতে যেমন লাগিয়া গিয়াছে, নবেলের এবং মাসিকপত্রিকার শস্তসম্পৎ কিছুতেই তাঁহার নিকট নুনতাস্বীকার করিবে না। চারিটদিন পরে যে বৎসর সমাপ্তিলাভ করিবে, সেই বৎসরটি বাঙলার ইতিহাসে স্মরণীয় হইয়া থাকিবে, এইরূপ আমরা আশা করি। এই বৎসরে আমরা একটা বিশেষ শিক্ষা লাভ করিলাম ; এই বৎসর উচ্চকণ্ঠে আমাদিগকে আপন ঘরে ফিরিতে শিক্ষণ দিয়াছে। বাঙলায় নবেলসাহিত্যের ও মাসিকসাহিত্যের স্বষ্টি করিয়া বঙ্কিমচন্দ্ৰ যশস্বী ংইয়া গিরাছেন, কিন্তু তিনি তার অপেক্ষাও বড় কাজ করিয়া গিয়াছেন। বাঙলাসাহিত্যে র্তাহার কোন কাজ সৰ্ব্বাপেক্ষা বৃহৎ, তাহ জিজ্ঞাসা করিলে,আমি বলিব, তিনি সাহিত্য উপলক্ষ্য করিয়া আমাদিগকে আণন ঘরে ফিরিতে বলিয়াছিলেন, এবং সে বিষয়ে তিনি যেমন কৃতকাৰ্য্য হইয়াছিলেন, কেহই সেরূপ হন নাই। ইংরেজের ভাষা অবলম্বন করিয়া আমরা ষে বড় হইতে পারিব না, বিদেশের ভাষার সাহায্যে সাহিত্যস্থষ্টি করিয়া বড় হইবার চেষ্টা যে অস্বাভাবিক ও উপহাস্ত, তাহা বঙ্কিমচন্দ্রই আমাদিগকে বুঝাইয়া গিয়াছেন। বঙ্কিমচন্ত্রের বহুপূৰ্ব্বে মহাত্মা রামমোহন রায় দেশের লোকের সঙ্গে কথ। কহিবার জন্ত দেশের ভাষারই আশ্রয় লইঙ্গছিলেন, তিনি বাঙলায় সাময়িকপত্র প্রচার করেন, বাঙায় বোস্তুশাস্ত্র প্রকাশ করেন, দেশের লোকের মতিগতি ফিরাইয়ার জন্ত