পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম সংখ্যা । ] ব্যঞ্জনবর্ণের উচ্চারণ। VII হইতে ইচ্ছামত বিচিত্র মঠমন্দির স্বষ্টি করিয়াছে, পৰ্ব্বতের গুহায় গুহায় যাহারা অক্ষয়প্রদীপের ন্তায় মহোজ্জল চিত্ৰশ্রেণী জ্বালাইয়৷ গিয়াছে, তাহদের ধৰ্ম্মবিশ্বাসে আর আমাদের বিশ্বাসে কোন প্রভেদ আছে কি ? সনাতন হিন্দুধৰ্ম্ম তখনও ছিল, এখনও আছে। যে জাতি সাঞ্চি গান্ধারস্তু,প গড়িয়াছিল, অজন্তায় চিত্র লিখিয়াছিল, সে জাতি পাতাল হইতেও উঠে নাই, আকাশ হইতেও পড়ে নাই ; সে এখনও যে আর্য্য, তখনও তাই; ধৰ্ম্মের আদশ, সমাজের নিয়ম, শাস্ত্রের, অনুশাসন এখনও সমান প্রচারিত—তবে কেন না আমরা আমাদের পূর্বপুরুষের সমকক্ষ হই ? আমাদের আদর্শের অভাব নাই—ব্রাহ্মণ্যযুগের, বৌদ্ধযুগের মন্দিরমঠ এখনও বিদ্যমান, শিল্পশাস্ত্রও অপ্রচুর নয়, নিপুণতার বিজুদও এখনও ভারতের হাতেই আছে; ইউরোপের ভ্রষ্টশিল্প মোহকুহকে কেবল আমাদের আচ্ছন্ন করিয়াছে মাত্র, লক্ষ্যভ্রষ্ট করিতে পারে নাই। “দেবানাং প্রতিবিম্বানি কুৰ্য্যাত”—দেববিশ্ব গঠন করিবে—এই ঋষিবাক্য গভীরভাবে আমাদের কারুশিল্পীর মনে এখনও মুদ্রিত রহিয়াছে। কারুশিল্পী বলিতে artschoolএর ছাত্র বুঝায় না, যাহারা বংশপরম্পরায় পুত্রপৌত্রাদিক্ৰমে এখনও প্রতিমা গড়িতেছে, পট লিখিতেছে, সুবর্ণের টুকৃরা হইতে স্বর্ণশতদল, শঙ্খখও হইতে বিচিত্র বলয়, বন্যপুষ্প হইতে দেবতার পুষ্পমুকুট, কুসুমালঙ্কার রচনা করিতেছে ; যাহারা শিশুকাল হইতে মাটিতে, পাথরে, সোনায়, রূপায় ধ্যানমূৰ্ত্তি গড়িয়া আসিতেছে, আমি তাহাদেরই কথা বলিতেছি। ঋষিবাক্য তাহার এখনও অমান্ত করে নাই এবং সেই কারণে তাহীদের শিল্পের অধঃপতন এখনও সুদুর। এ কথা যদি স্পষ্টতরভাবে চক্ষে দেখিয়া বুঝিতে চাও, তবে আশ্বিনের সন্ধ্যায় শঙ্খ ঘণ্টামুখরিত কোন দেবায়তনে আরতিপ্রদীপের আলোকতরঙ্গের মাঝখানে ধুপাচ্ছন্ন দুর্গাপ্রতিমার মুখের দিকে ভক্তিভরে চাহিয়া দেখিও, মহামায়ার কৃপায় মায়াকুহক দূর হইবে —দেখিবে, এখনও এদেশীয় শিল্পী মাটির প্রতিমায় কি নিরুপম সৌন্দর্য্য নিহিত করিবার ক্ষমতা রাখে এবং তুমি স্পষ্টই বুঝিবে, ধ্যানমূৰ্ত্তির মহত্ব কোনখানে, আর আর্যশিল্পের সৌন্দর্য্য ও স্থায়িত্ব কতটা । 輸 শ্ৰীঅবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ব্যঞ্জনবর্ণের উচ্চারণ ব্যঞ্জনবর্ণ দুইপ্রকার । ক হইতে ম পৰ্য্যস্ত যে পচিশটি অক্ষর, ইহার সম্পূর্ণ ব্যঞ্জনধর্মী এবং য হইতে হ পৰ্য্যন্ত আংশিক ব্যঞ্জনধৰ্ম্ম । কারণ ব্যঞ্জনের দুইটি লক্ষণ—(১) ইহা স্বরের সাহায্য ব্যতীত আপন হইতে উচ্চারিত হইতে পারে না ; (২) ইহার উচ্চারণে জিহবাযন্ত্র যাইয়া কণ্ঠতাম্বাদি স্থানের সহিত এমনভাবে মিলিত হয় যে, তাহাতে বাথামুলিঙ্গমনের পথ এককালে নিরুদ্ধ হইয়া যায়, যথা—অকৃ, অচ ইত্যাদি। কিন্তু অযু, অর, অল অৰু