বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৪৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$ఆ9 সাহিত্য অন্য কোনও সভ্যসমাজে দেখিতে পাওয়া যায় না । সে সাহিত্য এরূপ বিপুলাকার ধারণ করিয়াছিল যে, দশ শ্রেণীর রূপক এবং অষ্টাদশ শ্রেণীর উপরূপকে তাহু বিভক্ত হইয়া রহিয়াছে। অথচ এই বিপুল নাট্যসাহিত্যের সকল গ্রন্থেই এক কথা,—কোন গ্রন্থেই পাপের জয়, পুণ্যের পরাজয় দেখিতে পাওয়া যায় না। নাট্যশাস্ত্র সেরূপ গ্ৰন্থরচনার প্রশ্ৰয় প্রদান করে নাই। ইহাই ভারতীয় নাট্যসাহিত্যের সর্বপ্রধান উল্লেখযোগ্য বিশেষত্ব, – এই বিশেষত্ব সমগ্র নাট্যসাহিত্যে পরিস্ফুট হইয়া রহিয়াছে। নাট্যবস্তু বিয়োগান্ত হইলে, তাহীতে পাপের জয়, পুণ্যের পরাজয় অভিব্যক্ত হয়। অভিনয়শেষে যবনিক পতিত হইলে রঙ্গভূমি ৰেমন আঁধারে আচ্ছন্ন হইয়া পড়ে, দর্শকচিত্ত ও সেইরূপ আঁধারে আচ্ছন্ন হুইয়া থাকে । সংসারে এরূপ দৃপ্ত বিরল নহে,—সেখানে পাপের জয়, পুণ্যের পরাজয় প্রতি পদে লোকলোচনের সন্মুখীন হইয়া লোকচিত্ত অবসন্ন করিয়া থাকে। কিন্তু তাছাই কি শেষ,—ইহলোকই কি একমাত্র লোক ? মানবচক্ষু ইঙ্গপরলোকের ব্যবধান ভেদ করিয়া সম্মুখে অধিকদুর দৃষ্টিসঞ্চালন করিতে পারে না ; বরং অনেকসময়ে দৃশুমান লোকব্যবহারে পাপের জয়, পুণ্যের পরাজয় লক্ষ্য ক রয়া পথভ্রান্ত হইয়া পড়ে। ভারতীয় নাট্যসাহিত্য ইহপরলোকের ব্যবধান ভেদ করে, পাপপুণ্যের মহাসমরক্ষেত্রের শেষ গুপট উদঘাটিত করিয়া পুণ্যের জয়, লাপের পরাজয় দেখাইয়াদিয়া,আনন্দরসে দর্শৰ্কচিত্ত অভিষিঞ্চিত করিয়া দেয়। তাহা সেইজন্তই পরিণাম রমণীয়ণ यछझअनि । [ ৬ষ্ঠ বর্ষ, পৌৰ । এইজন্য নাট্যশাস্ত্রে নাট্যবস্তু পঞ্চসন্ধিসমন্বিত বলিয়া উল্লিখিত। নাটক এবং প্রকরণের আখ্যায়িকায় সেই পঞ্চ সন্ধি সুস্পষ্টভাবে দেখিতে পাওয়া যায়। একটির পর একটি,--প্রথম হইতে দ্বিতীয়, দ্বিতীয় হইতে তৃতীয়, তৃতীয় হইতে চতুর্থ, এবং চতুর্থ হইতে পঞ্চম,— এই পঞ্চ সন্ধির ভিতর দিয়া নাট্যবস্তু প্রবাহিত, মিলনানন্দে তাহার সর্বশেষ পরিসমাপ্তি । মানবজীবনও এই পঞ্চসন্ধিসমদ্বিত মহানাটক ;—লোকব্যবহারেও এই পঞ্চসন্ধি বর্তমান । মানবজীবনে ও লোকব্যবহারে সকল সময়ে ইহলোকের সংক্ষিপ্ত কাৰ্য্যকলাপের মধ্যে সকল সন্ধি গুলি দেখিতে পাওয়া যায় না, অনেক সময়ে শেষ সন্ধিতে উপনীত হুইবার পূৰ্ব্বেষ্ট যবনিক পতিত হইয়া থাকে । তক্ৰন্থই কথন-কখন কেবল পাপের জয়, পুণ্যের পরাজয় দেখিতে পাওয়া যায়,—হয় ত আর একটু ‘অভিনয় চলিলেই শেষসন্ধি দেখিতে পা ওয়৷ যাইত ; সেgানে গিয়া আবার দেখিত{ম,—পরিণামে পুণ্যের জয় অনিবাৰ্য্য । ইহাঙ্গ ভারতবর্ষের চিরপুরাতন অন্ধবিশ্বাস,— তাহা এখনও একেবারে বিলুপ্ত হয় নাই। to "প্রীরস্ত4চ প্ৰযত্নশ্চ তথা প্রাপ্তেশ্চ সস্তবঃ । নিয়তা চ ফলপ্রাপ্তিঃ ফলযোগশ্চ পঞ্চমঃ ॥” মানবজীবনের সকল আশা ফলযোগ, তাহ সহসা প্রাপ্ত হওয়া যায়" না। তাছার জন্ত প্রারম্ভ এবং প্রযত্ব চাই ; তাহাতে প্রাপ্তিসম্ভাবনা সমুপস্থিত হয়, কিন্তু কখন-কখন এই পাইলাম—এই পাইয়াছি—করিতে করিতেও ফলপ্রাপ্তি সংঘটিত হয় না ; কখন বা gাহার সম্ভাবনা পৰ্য্যন্তও বিলুপ্ত হইয়া গেল বলিয়া বোধ হয় ; তাহার পর সহিষ্ণু হইয়া অপেক্ষা,