পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৪৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নৱম সংখ্যা । ] সংস্কৃত নাট্যসাহিত্যের বিশেষত্ব। ፀ�‰ማ করিতে জানিলে, ফলযোগ আসিয়া পরিণামে আনন্দে আপ্লুত করিয়া দেয়। সকল কার্য্যেরই এইরূপ গতি। সৰ্ব্বস্তৈব হি কাৰ্য্যস্ত প্রারব্ধস্ত ফলার্থিভিঃ । এত অনুক্ৰমেশৈব পঞ্চাবস্থা ভবপ্তি হি ।” ফলযোগের আশাই সকল মানবের প্রধান আশা । তাহার জন্ত পুণ্যার্থী সকল প্রলোভন পরিত্যাগ করিতে যত্ন করিয়া থাকেন। সকলের জীবনেই একদিন-না-একদিন এই স্বাভাবিক পুণ্যপিপাসা উপস্থিত হইয়া থাকে। পুণ্য কি, তাহা জানে না,-তথাপি তাহাকে,লাভ করিবার জন্য ঔৎসুক্য প্রকাশ করিয়া থাকে। ইহাই মানবজীবনের প্রথম সন্ধি । যাহার জীবনে এই ঔৎসুক্য জন্মিল না, তাহার জীবন ব্যর্থ হইয়া গেল। যাহার জীবনে ঔৎসুক্য জন্মিলেও তাহার জন্ত গ্রযত্ন জন্মিল না, তাহারও ফলপ্রাপ্তি অসম্ভব হইয় গেল । যে ঔৎসুক্য প্রদর্শন করিল, যত্নচেষ্টার ক্রটি করিল না, ফলপ্রাপ্তির সম্ভাবনা দেখিয়া উৎফুল্প হইয়া উঠিল, তাহাকেও হঠাৎ আবার বিমর্ষ হইয়া পড়িতে হইল, “আসি আসি’ করিয়া কাম্যফল আসিল না ;—নানা ঘটনায় বিলম্ব ঘটয়া গেল। সমুচিত প্রতীক্ষার পর,বুঝি বা সমুচিত পরীক্ষার পর ভিন্ন, কাম্যফল সহসা উপস্থিত হয় না। নাট্যসাহিত্যের ভাষায় এই পঞ্চ সন্ধির পাচটি পারিভাষিক নাম পরিকল্পিত হইয়াছে— "মুখং প্রতিমুখং চৈব গর্ভে বিমর্শ এয চ। তথা নির্বহণং চেতি নাটকে পঞ্চ সন্ধয়: ॥” নাট্যসাহিত্যের মধ্যে নাটকই সৰ্ব্বাঙ্গসুন্দর,তাহাঁতে এই পাচটি সন্ধিই বর্তমান । তাহার নাম— মুখ, প্রতিমুখ, গর্ত, বিমর্শ এবং নির্ব হণ ৷ যে সন্ধির নাম মুখ, তাহাতে কেবল নাট্যবীজের সমুৎপত্তি,—তাহা হইতেই আখ্যায়িকার স্বত্রপাত হয় । দুষ্মন্তের মৃগয়া অভিজ্ঞানশকুন্তলের সমগ্র আখ্যায়িকার বীজরূপে উৎপন্ন হইয়াছিল। মৃগয়া না ঘটিলে মৃগামুসরণ ঘটিত না ;–আশ্রমমৃগ না হইলে ঋষিশিষ্য নিষেধ করিতেন না ;–ষ্ঠাহীর মুখে "আশ্রম অতি নিকটে অবস্থিত এই সমাচার জ্ঞাত না হইলে আশ্রমদর্শন ঘটিত না ;— আশ্রমদর্শন না ঘটলে, কোন ঘটনাই উপস্থিত হইতে ধারিত না । সুতরাং বাহার পারিভাষিক নাম মুখ, তাহাই আখ্যানবস্তুর প্রকৃত বীজ। যে সন্ধিতে এই বীজ উদৰাটিত হয়, তাহার নাম প্রতিমুখ,—মুখের পরেই প্রতিমুখ আসিয়া উপস্থিত হয়। যে সন্ধিতে সেই বীজ কখন প্রকাশুভাবে, কখন বা অলক্ষিত অবস্থায় পরিপুষ্ট হইতে থাকে, তাহার নাম গর্ভ। যে সন্ধির নাম বিমর্শ, তাহাতে ফলযোগের ব্যাঘাত অথবা বিলম্বমাত্র। শেষে নির্বহণ—ফলযোগ । • ৰেকোন সংস্কৃতনাটকে এই পঞ্চগন্ধির পরি চয় প্রাপ্ত হওয়া যায় । o নাটকের ন্যায় প্রকরণেও এই পঞ্চসন্ধি বিড়মান। দশ শ্রেণীর মধ্যে নাটক এবং প্রকরণ নামক প্রধান দুই শ্রেণী পুর্ণাঙ্গ। অপর জাট শ্রেণী সেরূপ পূর্ণাঙ্গ নহে। ডিম এবং সমৰকারে চারিটি সন্ধি-ব্যায়োগ এবং ঈহাযুগে তিনটি সন্ধি,–প্ৰহসন, বাঁধি, অন্ধ এবং ভাশে দুইটিমাত্র সন্ধি। ইহাই নাট্যশাস্ত্রের স্বপরি' চিত রচনাপ্রণালী। ইহাতে দেখিতে পাওয়া যায়—দশরূপকের কোন শ্রেণীর नाश একটিমাত্র সন্ধি নাই; তাছাতে নাট্য হইতে