পাতা:বঙ্গরহস্য - ভূবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিদ্যাশিক্ষা । বালকের পঞ্চম বর্ষে হাতেখড়ি হইলে পূর্বে পূর্বে বালকেয়া গুরুমহাশয়ের পাঠশালায় মাতৃভাষা শিক্ষা করিত। হস্তাক্ষর এবং শুভঙ্করী অঙ্কবিদ্য৷ সেই সকল পাঠশালায় শিক্ষা করিবার উত্তম সুযোগ ছিল। তাদৃশী পাঠশালা সহরে এক্ষণে অতি অল্পই আছে, মফস্বলে স্থানে স্থানে দৃষ্ট হয়, কিন্তু পূর্বের ন্যায় সে। সকল পাঠশালার আর আদর নাই, এখন পণ্ডিতের নিকটে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বর্ণপরিচয়াদি শিক্ষা দেওয়া হয়। এ প্রথা উত্তম। গুরুমহাশয়দিগের পাঠশালায় বালকেরা শুদ্ধাশুদ্ধ বিচার করিয়া লিখিতে শিখিত না, এখনকার পুলিসে, আদালতে এবং জমীনারী সেরেস্তায় যে প্রকার অশুদ্ধ শব্দাবলী ও বৰ্ণাৰলীর ছড়াছড়ি, বালকের সেইরূপ শিক্ষাই প্ৰাপ্ত হইত। অশুদ্ধ লেখার প্ৰণালীকে কিতাবতী প্ৰণালী বলে, ইহা অনেকেই জানেন। অশুদ্ধ করিয়া না। লিখিলে পুলিসের আমলারা, জমীদারীর আমলার এবং আদালতের আমলা ও উকীল-মোক্তারাদি তাহ প্ৰায় বুঝিতেই পারেন না। একজন উকীল এখনকার প্রণালীতে শুদ্ধ করিয়া একখানি আরজী লিখিয়া আদালতে দাখিল করিয়াছিলেন, আদালতের সেরেস্তাদর ভাহা বিশুদ্ধ উচ্চারণে পাঠ করিতে না পারিয়া হাস্ত্ৰ করিয়াছিলেন, এ কথাটী আমরা একটা জেলা-আদালতের ঘটনা বলিয়া উল্লেখ করিখেছি। আরজীখানি ফেরত হয় নাই, সুশিক্ষিত বাঙ্গালী হাকিম এজলাসে ছিলেন, সেই কারণে তাহা গ্ৰন্থ হইয়াছিল ; কোন সাহেবের। এজলাস হইলে ৰোধ হয়, সেখানি ফেরত দেওয়া হইত। কতাবর্তী প্রণালীতে এবং এখনকার বিশুদ্ধ প্রণালীতে এতদূর অন্তর। "