পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/১৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী

মহাত্মা তুলসীদাসের গান বা গাথা মধুর, মর্মস্পর্শী ও হৃদয়গ্রাহী। তাঁহার রচিত একটি গাথার যদি রূপান্তর করা যায় তবে সেটি এমন ভাবে দাঁড়াইতে পারে—

প্রথম যেদিন এসেছিলে ভবে,
কেঁদেছিলে তুমি হেসেছিল সবে,
সফল জীবন প্রয়াণে হাসিবে,
তোমার বিহনে সকলে কাঁদিবে। *

 অর্থাৎ তুমি ভূমিষ্ঠ হইয়াই কাঁদিয়া উঠিয়াছিলে, কিন্তু তখন সকলে আনন্দে হাস্য করিয়াছিল। এমন কাজ করিয়া যাও, যেন তুমি চলিয়া যাইবার সময়ে হাসিতে হাসিতে চলিয়া যাইবার সময়ে হাসিতে হাসিতে চলিয়া যাইও, আর তোমার জন্য সকল লোকে ক্রন্দন করে। জীবনধারণ তাঁহারই সার্থক, যিনি চলিয়া গেলে চারিদিকে একটা হাহাকার উঠে। আচার্য রামেন্দ্রসুন্দরের জীবনে এমনি ভাব দেখা যায়। তিনি এমন পবিত্র জীবন কাটাইয়! গিয়াছেন, এমন সকল কার্য করিয়াছেন, এমন ভাবে জীবন-ব্রত উৎযাপন করিয়া গিয়াছেন যে, যাইবার সময় তিনি হাসিতে হাসিতে চলিয়া গিয়াছেন, আর তাঁহার অভাবে বাংলার শিক্ষিত সমাজ অশ্রুপাত করিয়াছে।  তাঁহার মনীষা, সদ্গুণরাশি, শুদ্ধ চরিত্র ও অসাধারণ পাণ্ডিত্য হেতু তিনি শিক্ষিত সমাজে আচার্য রামেন্দ্রসুন্দর নামে পরিচিত ছিলেন। বস্ত্রন গোত্রীয়, জিঝেতীয়, ব্রাহ্মণবংশসম্ভূত গোবিন্দসুন্দর ত্রিবেদী মহাশয় তাঁহার পিতা ছিলেন। ১২৭২ সালের ৫ ভাদ্র রামেন্দ্রসুন্দর জন্মগ্রহণ করেন (১৮৬৩ খ্রিঃ)।  প্রথমে গ্রাম্য পাঠশালায় ছাত্রবৃত্তি পর্যন্ত পড়িয়া তিনি কান্দি ইংরেজি স্কুলে পড়িতে আরম্ভ করেন ও ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এই সময়ে তাঁহার পিতৃবিয়োগ হয়।  কলিকাতায় প্রেসিডেন্সি কলেজে তিনি ফার্স্ট আর্টস্ পড়িতে আরম্ভ করেন। এখানে তিনি পিতৃব্যের নিকট অবস্থান করিতেন। প্রথমাবধি তিনি অতি মেধাবী ছাত্র ছিলেন। এফ. এ * তুলসী ঘব জগমে আয়া, জগ হাঁসে তুম রোয়, এইসী কাম করকে চলো তুম হাঁস জগ রোয়।”