পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/২০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপেন্দ্ৰনাথ ব্ৰহ্মচারী মানুষের যদি অসাধারণ প্রতিভা থাকে, তবে তাহাকে যে অবস্থাতেই ফেলিয়া রাখা হউক না কেন, তাহার প্রতিভার স্মৃফুরণ না হইয়া যায় না। ডাক্তার স্যার উপেন্দ্রনাথ ব্ৰহ্মচারীর জীবনী ইহার উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্তস্থল। উপেন্দ্রনাথ ব্ৰহ্মচারী মহাশয়ের জীবন সত্যই বৈচিত্ৰ্যপূর্ণ। র্তাহার পিতা নীলমণি* ব্ৰহ্মচারীও ডাক্তার ছিলেন। ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দের ৭ জুন উপেন্দ্রনাথের জন্ম হয়। তিনি হুগলি কলেজ ও প্রেসিডেন্সি কলেজে শিক্ষালাভের পর মেডিকেল কলেজে প্রবেশ করেন। পরে কলিকতাস্থ ক্যাম্বেল মেডিকেল স্কুলে চিকিৎসাবিদ্যার শিক্ষক নিযুক্ত হন। ১৯০৫ খ্রিস্টােব্দ হইতে ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তাহাকে ঐ একই স্থানে কাৰ্য করিতে হইয়াছিল বটে, কিন্তু তঁাহার জ্ঞানলিন্সা তীহাকে উপযুক্ত কর্মক্ষেত্র প্রদানে বিরত থাকে নাই। তঁহার কর্মদক্ষতায় ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে তাহাকে কলিকাতা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক পদে নিযুক্ত করা হইয়াছিল এবং ১৯২৭ খ্রিস্টােব্দ পর্যন্ত তিনি সেই পদে কার্য করিয়াচিলেন। চাকুরিজীবন* হইতে অবসর গ্রহণ করার পর তিনি বৈজ্ঞানিক গবেষণায়৫ নিযুক্ত রহিয়া বাংলার যশ বৃদ্ধি করিয়াছেন এবং বাঙালির গৌরব ভাজন হইয়াছেন। ১৯২০ খ্রিস্টােব্দ হইতে ডাক্তার ব্ৰহ্মচারী গবেষণার কার্য পরিচালন করিতেছেন। মৌলিক গবেষণার ফলে তিনি “ইউরিয়া সন্টীবামাইন” নামক যে কালাজুরের ঔষধ আবিষ্কার করেন, তাহা সমগ্র সভ্য জগৎকে চমৎকৃত করিয়াছে। ইহার ফলে আমাদের দেশের যে কত ব্যক্তি ব্যাধিমুক্ত হইয়াছে তাহার সংখ্যা নাই। উপেন্দ্রনাথ বর্তমানে বাংলা দেশের অন্যতম প্রধান সুচিকিৎসক বলিযা পবিচিত। উপেন্দ্রনাথ শুধু সরকারি বা গবেষণা কর্যেই নিজেকে ব্যাপৃত রাখেন নাই। তিনি নানা বিভাগের বহু জনহিতকর প্রতিষ্ঠানের সহিতও সম্পর্ক রাখিয়াছেন। এশিয়াটিক সোসাইটির সদস্যরূপে তিনি পণ্ডিত সমাজে সুপরিচিত ; বহু বৎসর কােল তিনি উক্ত সোসাইটির চিকিৎসা-বিভাগের সেক্রেটারি ছিলেন এবং ১৯২৮-২৯ খ্রিস্টাব্দে উক্ত সোসাইটির সভাপতি নির্বাচিত হইয়াছিলেন। তঁহার গভীর জ্ঞান ও পাণ্ডিত্যের পরিচয় পাইয়াই তাঁহার দেশবাসীরা তঁহাকে উক্ত সম্মানসূচক পদ৭ ও স্যার উইলিয়াম জোনস স্বর্ণপদক প্ৰদান করিয়াছিলেন। ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে গভর্নমেন্টার্তাহার বুদ্ধিমত্তার ও কর্মশক্তির পরিচয় পাইয়া তীহাকে “রায় বাহাদুর’ উপাধিতে ভূষিত করিয়াছিলেন। ইহার পরে তাহার বহু উচ্চ সম্মান লাভের সুযোগ ঘটিয়াছিল। ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি কাইজার-ই-হিন্দ