পাতা:বনে পাহাড়ে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বনে-পাহাড়ে W98 বিলাসিতার সর্ব উপকরণ শূন্য-এই সকল অনাড়ম্বর জীবন-ধারা আমার কাছে এত নূতন, এত অপরিচিত যে শুধু এই দেখবার জন্য আমি সমস্ত রাত এইভাবে কাটিয়ে দিতে পারি। কিন্তু শীত পড়ে আসছে, এসময় বাইরে বসে থাকা স্বাস্থ্যের দিক থেকে নিরাপদ নয়। কাজেই আমরা বাংলোর মধ্যে গিয়ে আগুনের ধারে বসলাম । হরদয়াল সিং বললেন, আমি একটা বড় সাপের কথা জানি । আমি বললাম-কি সাপ ? -পাইথন। আমার অধীনস্থ এক কৰ্ম্মচারী একবার পাহাড়ী ঝরণায় সুান করতে যাচ্ছিলেন, শুনলেন জঙ্গলের মধ্যে সড় সড় করে শব্দ হচ্ছে, জঙ্গলের মধ্যে খুজে দেখলেন একটা প্ৰকাণ্ড পাইথন সাপ একটা ছোট হরিণকে প্ৰায় অৰ্দ্ধেক গিলে ফেলেছে। --তারপর ? --তারপর তিনি বনের মোটা লতা দিয়ে সাবধানে সাপটিাকে বঁাধলেন। স্নান সেরে তঁবুতে ফিরে সকলকে সংবাদ দিতেষ্ট-কুলী ও ফরেষ্ট গার্ডের দল হৈ হৈ করে গিয়ে সাপটিাকে জখম করলে । তখন কিন্তু তারা ভেবেছিল যে সাপটা মরেই গেল। বিকেলের দিকে নিকটবৰ্ত্তী বন্যগ্ৰাম থেকে হো-অধিবাসীরা সাপের মাংস নিতে এসে দেখে মৃতপ্ৰায় সাপটা সেখান থেকে দৌড় মেরেছে। ওদের জান বড় কড়া। সাপটা লম্বায় প্ৰায় দশ ফুট ছিল। --আপনি কত বড় সাপ দেখেছেন ? -পালামৌ-এর জঙ্গলে একবার আঠার ফুট লম্বা একটা পাইথন সাপ এক পাহাড়ী জঙ্গলের ঝরণার ধারে গাছের গায় জড়িয়ে থাকতে দেখেছিলুম। পাইথন সাপরা সাধারণতঃ ঐ জায়গাতেই থাকে। হরিণ বা খরগোস জল খেতে এলে ঝাপ করে তাদের উপরে পড়ে জড়িয়ে ফেলে একেবারে হাড়গোড় চুৰ্ণ করে দেয়, তারপর ধীরে ধীরে গিলতে থাকে। অনেক সময় সম্বর হরিণকেও রেহাই দেয় না। --মানুষ দেখলে কিছু বলে ? --সাবধানে না থাকলে একা মানুষকেও ছাড়ে না। আমি জানি