পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শরৎ-পরিচয়
১৩৭

নয়—সহজ ও স্বাভাবিক রস-সংস্কারেরও প্রয়োজন আছে। ইহাকেই আমাদের অলঙ্কারশাস্ত্রে ‘প্রাক্তন সংস্কার’ বা ‘বাসনা’ নাম দেওয়া হইয়াছে।

 ইহার কিছুদিন পরে একবার ছুটিতে কলিকাতায় অবস্থানকালে হঠাৎ শরৎচন্দ্রকে দেখিলাম। সেই প্রথম সাক্ষাতের সব কথাই মনে আছে। কর্নওয়ালিস স্ট্রীটের একটা দোকানঘরের উপরে তখন ‘যমুনা’-আফিস, একখানি ঘর ও তাহার কোলেই একটু ছাদ—উপরতলার এই ক্ষুদ্র অংশমাত্র ‘যমুনা’র অধিকারে ছিল; ঘরে আফিস, ও বাহিরে ছাদে ফরাশ পাতিয়া বৈঠক বসিত। সেদিন বেলা দুই-তিনটার সময়েই শরৎচন্দ্র আসিয়াছিলেন, আমিও সংবাদ পাইয়া উপস্থিত হইয়াছিলাম। শরৎচন্দ্র একখানি চেয়ারে বসিয়া গল্প করিতেছেন, একটু রুক্ষ শুষ্ক মূর্ত্তি—খাঁটি দেশী চেহারা। কিছু পরে রাস্তার ওপারের দোকান হইতে চা ও চপ আসিল। দেখিলাম, একটি কুকুর শরৎচন্দ্রের হাঁটুর উপরে দুই পা রাখিয়া তাঁহার হাতের ডিশ হইতে চা খাইতে লাগিল, মধ্যে মধ্যে চপের টুকরাও সাগ্রহে ভোজন করিতে লাগিল। ইতিমধ্যে ‘ভারতী’-সম্পাদক মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায় আসিয়াছেন—তিনি কুকুরকে এরূপ ঘৃতপক্ব আহার্য্য দেওয়ার সম্বন্ধে শরৎচন্দ্রকে সাবধান করিয়া দিলেন। শরৎচন্দ্র তাঁহার কুকুরের এই কুপথ্য-প্রীতির অপরাধ গুরুতর বলিয়া মনে করিলেন না। সস্নেহে তাহার দিকে চাহিয়া বলিলেন, “ও বড় একা বোধ করে, ওর জন্যে একটি ভাল সঙ্গিনী