পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৩০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्राछन्दक अौवन-नझा মেওয়ারের গৌরব, মেওয়ারের বিপদরাশি, মেওয়ারের আসন্ন বিজয়, এই সমস্ত বিষয়ের গীত সৈন্যমণ্ডলীকে প্রোৎসাহিত করিতেছে, আনন্দ গীতের সঙ্গে সঙ্গে সেই গীত নৈশ গগনে উত্থিত হইতেছে। এ সমস্ত উৎসব ব্যাপার হইতে বহন্দরে একটী অন্ধকারময় পৰ্বতস্থলীর উপর একজন যোদ্ধা একাকী পদচারণ করিতেছিলেন। তিনি মধ্যে মধ্যে সহসা দণ্ডায়মান হইতেছিলেন, কিন্তু উৎসবের গীত শনিবার জন্য নহে। মধ্যে মধ্যে সেই উপত্যকার মধ্যে যতদরে দেখা যায়, দটি নিক্ষেপ করিতেছিলেন, কিন্তু উৎসবের অগ্নিকুণ্ড দেখিবার জন্য নহে। কখন কখন কমলমীরের অপর্বে শৈলদগের উপর নয়ন নিক্ষেপ করিতেছিলেন, কখন অসংখ্য সৈন্যের দিকে চাহিতেছিলেন, কখন যা আপন হৃদয়ে হস্ত স্থাপন করিয়া সেই নক্ষত্রবিভূষিত অন্ধকারময় নভোমণ্ডলের প্রতি দৃষ্টিপাত করিতেছিলেন। ইনি মহারাণা প্রতাপসিংহ। চিতোর পুনরায় হস্তগত না করিয়া যোদ্ধা অন্য শয্যায় শয়ন করবেন না, প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলেন। সেই ব্ৰত যতদিন না সিদ্ধ হয়, ততদিন সবেণ রৌপ্য সপশ করবেন না, জটা শমশ্র বিমোচন করিবেন না, বক্ষপত্র ভিন্ন অন্য পাত্রে ভোজন করিবেন না, বেশভূষায় সামান্য দ্রব্য ভিন্ন অন্য কিছু সপশ করিবেন না। প্রাচীন ভারতবষের ঋষিগণও ইন্টসাধনাথ প্রতাপসিংহ অপেক্ষা কঠোর ব্রতসাধন করেন নাই, জগতের বীরাগ্রগণ্যগণও অভীস্ট সাধনাথ প্রতাপসিংহ অপেক্ষা জীবনব্যাপী উদ্যম করেন নাই। সমগ্র ভারতভুমির ঐশ্বৰ্য্য, বীরত্ব, বৃদ্ধিবল, বাহুবল, অসত্ৰবল প্রতাপসিংহের বিরুদ্ধে একত্রিত হইয়াছে; তাহার সঙ্গে রাজস্থানের অসাধারণ বীরত্ব, মাড়ওয়ার, অম্বর, বিকানীর, বন্দী প্রভৃতি প্রদেশের যুদ্ধবল একত্রিত হইয়াছে। ঐ নিজন পৰ্বতস্থলীতে যে যোদ্ধা অন্ধকারে দণ্ডায়মান রহিয়াছেন, উনি সমগ্র ভারতবর্ষের বিরুদ্ধে একাকী যুঝিবেন প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, অথবা সবদেশ ও স্বাধীনতার জন্য শেষ রণস্থলে, মেওয়ারের শেষ উপত্যকায় বা পৰ্বত-কন্দরে হৃদয়ের শোণিত দিবেন, স্থিরসঙ্কল্প করিয়াছেন। রজনী দ্বিপ্রহরের পর মহারাণার কয়েকজন প্রধান সেনানী সেই স্থানে উপস্থিত হইলেন, মহারাণা তাঁহাদিগের জন্যই অপেক্ষা করিতেছিলেন। তাঁহাদিগকে দেখিয়া রাণার চিন্তাসত্রে ছিন্ন হইল, তিনি সাদরে তাঁহাদিগকে আহবান করিলেন। সেই পৰ্বতস্থলীতে সকলে উপবেশন করিলেন। প্রতাপসিংহ বলিলেন,—বীরগণ । আপনাদিগের সাহস, আপনাদিগের উৎসাহ দেখিয়া আমি আনন্দিত হইয়াছি, এই শিখর হইতে এই অসংখ্য সৈন্য দেখিয়া আমি উল্লসিত হইয়াছি, সেই জন্য আপনাদিগকে ধন্যবাদ দিতে এই নিজজন স্থানে আহবান করিয়াছি। সালমাত্ৰাধিপতি রাওয়ং কৃষ্ণসিংহ রাণার দক্ষিণদিকে বসিয়াছিলেন, তিনি বলিলেন-- মহারাণা ! যুদ্ধের সময়, বিপদের সময়, কবে মেওয়ারের যোদ্ধগণ মেওয়ারের মহারাণার পাশ্ব’ ত্যাগ করে ? ঐ যে অসংখ্য সৈন্য দেখিতেছেন, উহাদের হৃদয়ের শোণিত, আমাদের হৃদয়ের শোণিত মহারাণার। আজ্ঞা করন, সে শোণিত বহিবে। প্রতাপ। কৃষ্ণসিংহ, আপনার ঋণ আমি কখনও পরিশোধ করিতে পারিব না। যেদিন পিতার মৃত্যু হয়, যেদিন ভ্রাতা যোগমল্ল সিংহাসনে বসিয়াছিলেন, সেদিন সভার মধ্যে আপনিই তাঁহাকে বলিয়াছিলেন-মহারাজ ! আপনার ভ্রম হইয়াছে, ঐ স্থান আপনার ভ্রাতার ! সেইদিন আপনিই আমার কোষে এই অসি ঝালাইয়া দিয়াছিলেন; যতক্ষণ আসি আমার হস্তে থাকিবে, ততক্ষণ সালুমব্রাধিপতি আমার দক্ষিণে থাকিবেন। কৃষ্ণসিংহ। সালমোৱা ইহা ভিন্ন অন্য পুরস্কার চাহে না । বামিধামাই সালমেত্রার পর্যানগত পুরস্কার। পরে রাঠোর বংশীয় জয়মল্ল ও জগাওয়ৎ বংশীয় পত্তের সস্ততি ও আত্মীয়গণকে আহবান করিয়া মহারাগা বলিলেন,—চিতোর ধবংসের সময় জয়মল্ল ও পত্ত জীবন দান করিয়া যে যশ ক্রয় করিয়াছেন; পনেরায় চিতোর অধিকার করিয়া আপনারাও কি সেই যশ ক্রয় করিতে অভিলাষ করেন ? ' তাহারা উত্তর করিলেন—সাধন জগদীশ্বরের হস্তে, চেন্টায় যোদ্ধাগণের ক্রটি হইবে না। ミや6。