বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শিশু-ভারতী - চতুর্থ খণ্ড.djvu/৩১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

鸭一一 সব তীর কেমন করে যেন ফিরে এসে তার সৈন্তদের গায়ে লাগছে আর তারা পট্‌পট্‌ মরছে। অবস্থা বেগতিক দেখে তিনি নিজে একটি ধনুক তুলে নিয়ে এক দেবদূতের দিকে লক্ষ্য করে তীর ছুড়লেন। তিনি পরিস্কার দেখতে পেলেন হে, তীরটা দেবদূতের গায়ে লাগলো কিন্তু তবু সে মরলো না। কেবল তার গা থেকে ফোটা দুয়েক রক্ত সেই জাহাজের উপর পড়লো। সেই এক ফোট রক্ত পড়তেই মনে হলো যে, কে যেন সেই জাহাজটার উপরে সহস্ৰ মণ বোঝা চাপিয়ে দিলে। তার ফলে ঈগল পার্থীরা আর জাহাজের ভার বইতে পারলে না। তাদের ডানা ভারের চোটে ভেঙ্গে গেলো, আর হু হু করে’ জাহাজটা শূন্ত থেকে মাটিতে পড়তে লাগলো । অত উচু থেকে পড়তেও তো সময় লাগে ? সেই সময়টুকুর মধ্যে রাজামশাইয়ের ছদশ কিছু কম হলো না। র্তার মাথার উপরে বাতাস বো লো করে" ডাকতে লাগলো, তাব অনেক সৈন্স ঝড়ে কোপায় উড়িয়ে নিয়ে গেলো, তা কেউ বলতে পারে না । আর কতকগুলো খড় বড় সমুদের কাকড়ার মতো কি সব এক রকমের জন্তু, হুগ হুগ করে’ উড়ে এসে, রাজামশাইকে ও তার সৈন্যদেরকে কামড়ে একেবারে ক্ষতৰিক্ষত করে” দিলে । তারপর রাজামশাইয়ের বরাত জোরেই বল, বা দেবতাদের কাছে তার আরও শাস্তি তোলা ছিলো বলেই বলো, জাহাজটা ভাগ্যক্রমে পড়লো জলে । জাহাজটা যদি মাটিতে বা পাহাড়ের উপরে পড়তো, তাহলে জাহাজটা তো গুড়ো হয়ে যেতই, রাজামশাইও তাইলে গুড়ো হয়ে যেতেন, আর সেই সঙ্গে তার পৃথিবী ও স্বগের রাজা হওয়া বেরিয়ে যেতো। যাহোক তৰু ক্ষতৰিক্ষত শরীরে রাজামশাই বাড়ীফিরে গেলেন। রাজামশাই কিন্তু কিছুতে দম্লেন না। তিনি ঠিক করলেন যে, যেমন করেই হোক তার স্বর্গ জয় করা চাই-ই চাই। ডাক্তার কবিরাজ দেখিয়ে যখন তার গায়ের কাটা ঘা সেরে গেলে, তখন তিনি আবার দেবতাদের সঙ্গে যুদ্ধের উদ্যোগ করতে লাগলেন। এবার একটা উড়ো জাহাজের জায়গায় তৈরী হলো একশো উড়ো জাহাজ। আর সেই সব জাহাজ আকাশে উড়িয়ে নিয়ে যাবার জন্য কোটি কোটি ঈগল পাণী পোষা হলো । যুদ্ধের জন্য অস্ত্র-শস্ত্র প্রস্তুত হলো প্রচুর। পৃথিবীর সব দেশ থেকে রাজার জন্য সৈন্য-সামন্ত এলো। সেই রাজা যুদ্ধের জন্য এমন No8×ახ -শিশু-জ্ঞাজাতী. -- --- ৰিপ্লাটু আয়োজন করেছিলেন যে, পৃথিবীতে আজ পর্য্যস্ত কোনো যুদ্ধ উপলক্ষে অত সৈন্য ও অত অস্ত্র-শস্ত্র কখনো জোগাড় হওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি। সৈন্যেরা সব জাহাজে উঠছে,-জখনও জাহাজ ছাড়তে আর খানিক দেরী রয়েছে । চারিদিকে ব্যস্ততা । যুদ্ধের বাজনা ও শাখ প্রভৃতি বাজছে । ঠিক এমনই সময় স্বগের দেবতারা এক ঝণক বড় বড় বিষাক্ত মশা রাজামশাইয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্যে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিলেন। সেই মশাগুলির এমনি । বিষযে,তাদের কামড়ে সাপের কামড়ের মতো যন্ত্রণা | হয়, আর মানুষ পাগলের মতো অস্থির:হ’য়ে নাচতে পাকে । মহারাজ জাহাজে উঠতে যাবেন, এমন সময় সেই মশার বাঁকি এসে ভীষণভাবে তাকে অfক্রমণ করলো। রাজা খাপ থেকে তলোয়ার বার করে’ মশাদের মীরবার জন্য এদিক ওদিক চালাতে লাগলেন। কিন্তু একটি মশাও মরলো না। ওদিকে রাজামশাইয়ের গা-হাত-পা মশার কামড়ে ভীষণ জালা করতে লাগলো। তিনি মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি দিতে লাগলেন, তবু মশা ছাড়ে না। তখন রাজামশাই হুকুম দিলেন, তাড়াতাড়ি আমাকে একটা মশারী দিয়ে ঢেকে দাও, আর মশাদের উপর তীর ছোড় র্তার হুকুম শুনে সব সৈন্যের হাসতে লাগলো। তারা ভাবলে মশা মারতে আবার তীর ছুড়বে; কি ! রাজামশাই নিশ্চয়ই পাগল হ’য়ে গেছেন। কয়েকজন তথনই রাজামশাইকে একটা মশারী এনে ঢাকা দিলে, তবু কোথা দিয়ে একটা মশা মশারীর ভিতর ঢুকে তাকে এমনি কামড় কামড়ালে যে, জলুনির চোটে মশার ছেড়ে তিনি পাগলের মতো ছুটোছুটি করতে লাগলেন। তার সৈন্য-সামস্তেরা এই কাও দেখে ভাবতে লাগলো—যেমন কৰ্ম্ম, তার তেমনি ফল। যাও না স্বর্গের দেবতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে। সেই সব সৈন্যদেরও ভীষণ ভয় হলো যে, ঐ রকম দু-চার বTক বিষাক্ত মশা যদি দেবতারা তাদের দিকেও পাঠিয়ে দেন ত মহা মুস্কিল হবে। সেইজন্য সৈন্যেরা লৰাই বলে" বললো যে, তারা যুদ্ধে যাবে না। তবু যদি রাজামশাই বেশী পীড়াপীড়ি করেন তো রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করিবে। রাজামশাইও তার সব সৈন্য ও দেশের লোকদের সামনে সামান্য কয়েকটি মশার কাছে লাঞ্ছনায় এমনি লজ্জিত ও অপ্রতিভ হলেন যে, অৰিষ্মতে আর কোনো দিনও তিনি স্বর্গ জয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করেন নি । - -