পাতা:সাহিত্য-চিন্তা - কুমুদিনী বসু.pdf/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জ্ঞান
১১৭

 জল, বায়ু, আলোক যেমন স্বাভাবিক ও সহজ প্রাপ্য, ধর্ম্মও তেমনি স্বাভাবিক। সকলের প্রাণ হইতেই এই প্রকার ধ্বনি অবিশ্রাম উঠিতেছে।

 তবে কেন সকলে নিজের প্রাণে প্রত্যাদেশ শুনিতে পায় না? আত্মা যতই নির্ম্মল হইতে থাকিবে ততই এই বাণী স্পষ্ট হইতে স্পষ্টতর শ্রুত হইবে। কিন্তু মানবাত্মা যতই কেন মলিন হউক না, ভিতরকার এই বাণী সকলেই অস্পষ্ট ভাবে শুনিতে পায়। কিন্তু কে তাহাকে গ্রাহ্য করে? পাপে প্রবৃত্ত হইতে আরম্ভ করিলে প্রথম নিশ্চয়ই প্রাণে আঘাত দিয়া কে জানায়— “ইহা করিও না”। অন্ধকারে লোক চক্ষুর অজ্ঞাতে এই আলোক নিশ্চয় অলক্ষিতে একবার পাপীর প্রাণে প্রকাশিত হয়। কিন্তু সে তাহা অবহেলা করে। পুনঃপুনঃ স্বতঃসিদ্ধ জ্ঞানরূপ ব্রহ্মবাণী অবহেলা করিতে করিতে অবশেষে জীব পাপে অভ্যস্ত হইয়া পড়ে। এমন সুন্দর স্বভাবতঃ পবিত্র মানবাত্মাকে অপবিত্র রাখা কি স্বাভাবিক? যদি মানব সর্ব্বদা প্রাণের এই স্বতঃসিদ্ধ জ্ঞান লক্ষ্য করিয়া প্রত্যাদেশ অনুসারে চলিতে চেষ্টা করে তবে নিশ্চয়ই সে পুণ্যজ্যোতিঃ লাভ করিতে সমর্থ হয়।

সমাপ্ত।