পাতা:সাহিত্য-চিন্তা - কুমুদিনী বসু.pdf/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৬
সাহিত্য-চিন্তা

সর্ব্বপ্রধান রূপা। কে প্রাণের ভিতর গম্ভীর নীরব এই প্রকার ভাষায় বলিতে থাকেন—"ঈশ্বর আছেন! এই প্রকার নির্ব্বাক ধ্বনি প্রাণের অন্তস্তল হইতে নিরন্তর ধ্বনিত হইতেছে। জগতে এমন কে দুষ্কৃতিকারী আছে, যাহার প্রাণ হইতে একবারও দুষ্কার্য্যের প্রতিবাদ উত্থিত হয় না? এমন কে নাস্তিক আছে যে আপনার সৃষ্টিকর্ত্তাকে অস্বীকার করিবার সময় একবারও তাহার প্রাণ কাঁপিয়া ওঠে না? এই স্বভাবসিদ্ধ আত্মপ্রত্যয়কে কাহারও অস্বীকার করিবার সাধ্য নাই।

 এই স্বতঃসিদ্ধ জ্ঞানকে ভক্তসাধকগণ ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে তুলনা করিয়াছেন। ঘড়ির কাঁটা যেমন সর্ব্বদা টক্ টক্ শব্দ করিতেছে, দিন নাই, রাত্রি নাই অবিরাম অবিশ্রাম কেবল টক্ টক, শব্দ। তেমনই মানবের প্রাণের প্রাণে, অন্তরের অন্তরে বসিয়া একজন দিন রাত্রি অবিশ্রাম শব্দ করিয়া জানাইতেছেন “এটি ভাল, এটি মন্দ” “এটি ভাল, এটি মন্দ” “আমি আছি” “আমি আছি”। নীরব ভাষার নিরন্তর এই বাণী উত্থিত হইতেছে। ইহা প্রমাণ করিবার জন্য কোন যুক্তি তর্কের আবশ্যক হয় না। ইহাকে লোকে বলে বিবেক, কিন্তু ইহা ভগবানের সাক্ষাৎ প্রত্যাদেশ।