পাতা:সাহিত্য-মীমাংসা - বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য.pdf/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>०२ সাহিত্য-মীমাংসা অলঙ্কারের সমস্ত ধর্ম নিঃশেষে সাহিত্যিক অলঙ্কারের স্কন্ধে চাপাইয়াছিলেন । কাব্যালঙ্কারসমূহ যে নারীদেহের প্রসাধনের সামগ্ৰী কটক, কুণ্ডল প্রভৃতি লৌকিক অলঙ্কার হইতে কোনও অংশে পৃথক হইতে পারে, এইরূপ আশঙ্কার কোনও আভাস তাহদের গ্রন্থে নাই । তাহারা মনে করিতেন, শ্রবণ হইতে কুণ্ডল অপসারিত করিয়া যেমন তাহার পরিবর্তে কণিকাসংযোগ করা যাইতে পারে, সেইরূপ কাব্যেও অকুপ্রাস, উপমা, রূপক, সমাসোক্তি প্রভৃতি শবণর্থ!লঙ্কারসমূহ কবি র্তাহার ইচ্ছাকুসারে গ্রহণ ও বর্জন করিতে পারেন । এই হানোপাদানবশত কাব্যসৌন্দলের এমন কিছু লক্ষণীয় পরিবর্তন ঘটিতে পারে, এইরূপ ধারণা তাহদের ছিল না। অনেন্দবর্ধন কর্তৃক ধ্বনিবাদের প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তিত হইয়া গেল। আনন্দবর্ধন দেথাইলেন যে, পূর্বাচার্যকল্পিত অলঙ্কারের এই যথেচ্ছ সংযোগ-বিয়োগ সাহিত্যক্ষেত্রে কেন, লৌকিক প্রসাধনের ক্ষেত্রেও অসম্ভব। সাহিত্যের যাহা মূলীভূত তত্ত্ব, অর্থাৎ রসধবনি, অলঙ্কার তাহারষ্ট অনুযায়ী হইবে । আত্মার ঔচিত্য অতুযায়ী অলঙ্কারের যোজনা করিতে হইবে । অলঙ্কারের কোনও পুথক সৌন্দয নাই । উপমা, যে উপমা বলিয়াই সর্বত্র সুন্দর হইবে, এমন কোনও নিদিষ্ট বিধি নাই । অতু প্রাস, যমক প্রভৃতি আপাতদৃষ্টিতে যতই শ্রুতিসুখকর হউক না কেন, সর্বত্রই তাহীদের এই মাধুর্য অখণ্ডিত থাকিবে, এইরূপ আশা করা যায় না। অভিনবগুপ্ত এই স্থলে একটি উদাহরণের দ্বারা ধ্বনিবাদগণের এই মতবাদ বুঝাইবার চেষ্টা করিয়াছেন, “শবশরীরে অলঙ্কারযোজনার দ্বারা কিছুমাত্র সৌন্দর্যসাধন করা যায় না, কেন না, সেখানে আত্মার অস্তিত্ব নাই । যতিশরীর অলঙ্কারমণ্ডিত হইলে দর্শকের হাস্তাবহ হইয়া উঠে, যেহেতু সেখানে আত্মার ঔচিত্য নাই ।” অতএব কাব্যের আত্মস্বরূপ রসতত্ত্বের সদ্ভাব ও ঔচিত্য এই উভয়ের দ্বারা সাহিত্যে অলঙ্কার-যোজনা নিয়ন্ত্রিত হইবে। তবেই অলঙ্কার সৌন্দর্যের কারণরূপে বিবেচিত হইবে । নতুবা রসোঁচিত্যের দিকে লক্ষ্য না করিয়া ষে কৰি