সাহিত্য-মীমাংসা Vo) আকর্ষণ করিতে পারে না। তাহারা নিজেদের জীবনেরই প্রতিচ্ছবি সাহিত্যের মধ্যে নূতন বর্ণে অঙ্কিত দেখিবার জন্য উৎসুক। অতএব সাহিত্যের আদর্শ প্রাচীন যুগ হইতে বর্তমান যুগে বহু পরিবর্তিত হইয়াছে। সুতরাং মৃত, প্রস্তরীভূত, নিজীব সাহিত্যের সমালোচনার মানদণ্ড লইয়া সজীব এবং ক্রমবর্ধমান সাহিত্যের উৎকর্ষ ও অপকর্ষ বিচার করিতে বাসলে হাস্যাম্পদ হইতে হইবে। অপর পক্ষে, ইউরোপীয় সাহিত্য-মীমাংসার ধারা সাহিত্যসৃষ্টির সহিত সমান বেগে প্রবাহিত হইয়াছে, দুয়ের মধ্যে কোনও ব্যবধান রচিত হয় নাই। ইউরোপীয় মনীষিগণ কখনও অন্ধভাবে অতীতের পূজা করেন নাই। যুগে যুগে বিখ্যাত সমালোচকগণ সমসাময়িক সাহিত্যের গতি ও প্রকৃতি সূক্ষ্মভাবে লক্ষ্য করিয়া তাহাদের নিজ নিজ বিচারবুদ্ধি অনুযায়ী স্বতন্ত্রভাবে, স্বাধীন চিন্তাশক্তির বশবর্তী হইয়া সাহিত্যের মাপকাঠি নির্দেশ করিয়া গিয়াছেন। পরববর্তী যুগে, আবার নূতন যুগ-সাহিত্যের প্রবাহে তাহদের সেই তুলাদণ্ড হয়তো ভাসিয়া গিয়াছে। আবার তাৎকালিক সমালোচকগণ নূতন বিচারপদ্ধতি প্রবতিত করিয়াছেন । এইভাবে সাহিত্যের সহিত সমালোচনারও ক্রমাভিব্যক্তি ঘটিয়াছে, তাহাতে নবীনতা আছে, নূতন ভাব-ধারার সহিত সংমিশ্রণে তাহ প্রবহমান নদীর মত সজীব । সত্য বটে, ইউরোপীয় সমালোচনা-সাহিত্যও আরিস্তত ল-এর কাব্য-মীমাংসা বিষয়ক চিরন্তন গ্রন্থের (Poetics) উপরই মুখ্যভাবে প্রতিষ্ঠিত ; কিন্তু তাহা হইলেও আরিস্ততল-এর মূল স্বত্রগুলির যুগোপযোগী ব্যাখ্যার দ্বারা ইউরোপীয় মনীষিবৃন্দ তাহাকে বর্তমান সাহিত্যের সহিত সংযুক্ত করিবার চেষ্টা করিয়াছেন । এইভাবে তাহার। অতীতের সহিত বর্তমানের সংমিশ্রণ ঘটাইয়াছেন। বিচ্ছিন্ন অপরিচিত নিজীব অতীতের দ্বারা সজীব বর্তমানের যাচাই করিবার প্রয়াস করেন নাই। কিন্তু এই যুক্তির দ্বারা ভারতীয় নিজস্ব সাহিত্য-সমালোচনারীতি ও প্রাচীন শাস্ত্রধারার প্রতি আমাদের বিতৃষ্ণ সমর্থন করা যায় না। আমাদেরও আরিস্ততল স্থানীয় বহু মনীষী রহিয়াছেন, তাহদের রচিত