8 সাহিত্য-মীমাংসা সাহিত্য-মীমাংসা-বিষয়ক একাধিক গ্রন্থও আজ মুত্রিত ও প্রকাশিত হইয়াছে। এক-একখানি পুস্তক অমূল্য জ্ঞানভাণ্ডার। ইউরোপীয় সাহিত্যিক ও সমালোচকবৃন্দ যেমনভাবে আরিস্ততল হোরেস্ প্রভৃতি প্রাচীন মনীষিগণের সাহিত্য-মীমাংসা-বিষয়ক গ্রন্থসমূহ পাঠ করিয়া সমসাময়িক সাহিত্যধারার সহিত সামঞ্জস্য রক্ষা করিবার জন্য নূতন দৃষ্টিতে তাহদের ব্যাখ্যা করিয়াছেন এবং করিতেছেন, কই, সেইরূপ দৃষ্টিভঙ্গ লইয়া তো আমরা আমাদের স্বদেশের শাস্ত্রের পঠন-পাঠন করিতেছি না ? অথচ বিদেশীয় শাস্ত্রের প্রশংসায় আমর। পঞ্চমুখ । বেগ স-এর Creative Evolution-এর কথা উঠিলে আমাদের রসনা আর যেন বিশ্রাস্ত হইতে চাহে না, অথচ আমাদের প্রত্যেকেই মৃত, আমাদের স্বজনী-শক্তিও নাই, অভিব্যক্তি ও নাই। সমস্ত দোষ প্রাচীনদের উপর চাপাইয়া আমরা সকল ভার হইতে যেন অব্যাহতি লাভ করিতে পারিলেই বাচি। প্রতীচীর বিচিত্র বর্ণচ্ছটায় রঞ্জিত চক্রবালের দিকে আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ। ইউরোপের প্লেটো আছেন, আরিস্ততল আছেন, হোরেস আছেন , আমাদের ভরত নাই, ভামহ নাই, দণ্ডী নাই, অভিনব গুপ্ত নাই ? অাজ প্রতীচ্য হইতে প্রাচ্যের আকাশের প্রতি দৃষ্টি ফিরাইতে হইবে । অতীতের গাঢ় অন্ধকারের মধ্যে যে সকল রত্ব অনাদৃত অবহেলিতভাবে লুকাইয়া আছে, আজ আবার তাহদের নূতন করিয়া ফিরিয়া পাইতে হইবে, তাহাদের নূতন করিয়া সংস্কার করিতে হইবে । তখন দেখিতে পাইব, আমাদের প্রাচীন আচার্যগণ সাহিত্যের যে স্বরূপ নির্দেশ করিয়া গিয়াছিলেন, সাহিত্যের যে উদেষ্ঠ তাহারা ঘোষণা করিয়া গিয়াছিলেন, এক কথায় যে ভাবে তাহার। সাহিত্যের বিশ্লেষণ করিয়া গিয়াছেন, তাহ কোনও নির্দিষ্ট কালের বা দেশের পরিধির মধ্যে আবদ্ধ নহে, তাহা সৰ্বকালের সর্বদেশের সাহিত্যের গুণাগুণ নিরূপণ করিবার শাশ্বত মানদণ্ডস্বরূপ। র্তাহারা জানিতেন, যুগে যুগে সাহিত্যের গতিপথ বিভিন্ন দিকে, বিভিন্ন ধারায় প্রবাহিত হয়, রচনার শৈলী পরিবর্তিত হয়, সাহিত্যের সংজ্ঞা ও স্বরূপ বিষয়ে কবি ও সহৃদয় উভয়েরই