কপট না করি আমি শুন গোপীগণ।
এই তরী বটে মোর অতি পুরাতন॥
অতি বেগবতী নদী দেখি লাগে ভয়।
জলের তরঙ্গ দেখ অতিশয় হয়॥
কৃষ্ণের অবস্থা।ঈষৎ পরাণ কাঁপে এই মোর তরী।
একে একে আনিবারে কত ভয় করি॥
সাঁতারিতে নাঞি জান তোমরা অবলা।
মেঘের তরঙ্গ দেখ অবসান বেলা॥
যমুনা করিব পার এমন সময়।
দেখিয়া তোমার রূপ মনে বাসি ভয়॥
সাহস করিতে পার তবে বিনোদিনী।
যদি নায়ে পার হবে বৈস একাকিনী॥
সুখময়ী এত শুনি কহিল তখন।
কর্ণধারে কহে কিছু বিনয় বচন॥
ঠেকিলাঙ মুঞি এক গোঙারের হাতে।
বিলম্ব করিয়া দানী দিলেক যন্ত্রণা।
তেঞি এত কষ্ট পাইল সকল অঙ্গনা॥
করিবে আপনি যদি একে একে পার।
বিলম্বি যন্ত্রণা যেন নাঞি পাই আর॥
নায়্যা বলে শুন শুন বিনোদিনী রাই।
দুঃখ দেখি নারী পার করিয়া বেড়াই।
পার হৈতে ইচ্ছা যদি থাকয়ে তোমার।
আগে বিনোদিনী নায়ে চাপহ আমার॥
গোপীর প্রধান রাধা চাপিলেন নায়।
হাসিয়া নাবিক-মণি মন্দ মন্দ বাএ॥
হেন কালে মায়া-মেঘ গগনে উদয়।
প্রবল পবন-গতি মন্দ মন্দ বয়॥
অগাধ সলিলে নৌকা নিল কর্ণধার।
জীবন বলেন শুন কৌতুক বিস্তার॥
কথো দূরে রাখে তরী কৌতুক বিস্তার করি
খেয়া রাখিলেক কর্ণধার।
রাধার সঙ্গে রহস্য।তোমার যৌবন ভরে তরী টলমল করে
কেমনে করিব আমি পার॥
পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/১০৪৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভাগবত—জীবন চক্রবর্ত্তী—১৮শ শতাব্দী।
৯১৭