গগনে উঠিল মেঘ বায়ু বহে অতিরেক
তরী ফিরে কুমারের চাক।
বিষম তরঙ্গ দেখি মনে ভয় হৈল সখী
আজি বড় হইল বিপাক॥
বড়াই হইল পার তরী-অঙ্গে নাহি ভার
তেঞি দ্রুত লৈয়া গেলা তরী।
তোমার অঙ্গের ভরে তরণী আমার ঘোরে
বল দেখি উপায় কি করি॥
নায়্যা যদি এত কয় অন্তরে লাগিল ভয়
হাসিয়া কহেন বিনোদিনী।
আমি সে গোপের মায়্যা শুনহ সুন্দর নায়্যা
কি বলিব আমি কিবা জানি॥
মোর অঙ্গে এত ভার কোথা হৈতে আইল আর
এই দেখ সব কলেবর।
কেমন তোমার তরী মহিমা বলিতে নারি
তরী কেনে নাহি সহে ভার॥
কর্ণধার বলে রাই শুনহ আমার ঠাঞি
ভাল তুমি কহিলে আপনি।
কৃশ দেখি কলেবর যা হৈয়াছ এত ভার
ইহা আমি স্বপনে না জানি॥
শুনহ নাবিক-মণি পার না করিবে কেনি
নৌকা কেনে নাহি সহে ভার।
এবে নমস্কার করি কেমনে বঞ্চিবে নারী
মিছা কেনে কহ কর্ণধার॥
নবীন কাণ্ডারী তুমি এখনে জানিল আমি
না পারিলে রাখিতে তরণী।
নাহি দেখ নিজ দোষ কহিতে করহ রোষ
নানা কথা কহত আপনি॥
তুমি কহ নানা কথা বিপাকে ঠেকিল এথা
সকলি সহিতে আমি চাই।
পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/১০৪৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯১৮
বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়।