ধূলিরাশি/চির স্নেহের ভগিনী আমার (জন্মদিন উপলক্ষে)

উইকিসংকলন থেকে

চির স্নেহের ভগিনী আমার

(শুভ জন্মদিন উপলক্ষে।)

সারাদিন আহা, হাসিরাশি মাঝে,
 স্বপনের প্রায় গিয়াছে সুখে।
সারাদিন আজি, সুখের বিজলী
 খেলেছিল ওই সরল মুখে।

আজি শুভদিনে, স্নেহের ভগিনি,
 প্রিয় পরিজন আদর করে।
নানাবিধ কত, ফুলরাশি এনে,
 ফুলরাণী তা’রা করেছে তোরে॥


কত লোকে আজি, কত সাধ করে,
 নব উপহার যতনে এনে।
দিয়েছিল ভোরে, হরষের ভরে,
 দুখছায়াহীন এ শুভদিনে।

চলে গেছে এবে দিবসের আলো,
 তা’রি সাথে সব চলিয়ে গেছে।
হাসি খেলা যত, সারা দিবসের,
 একে একে তা’ও নিবিয়ে গেছে।

শ্রান্ত দেহখানি পড়িছে এলা’য়ে,
 ঘুমে আঁখি দুটি মুদিয়া আ’সে।
তবুও মধুর কমল-আননে,
 মধুর হাসিটি এখন (ও) ভাসে॥

উপহার তরে সকলে দিয়াছে,
 বাকি আছে শুধু আশিস্ মম।
নিশীথ-আঁধারে, নীরব ভাষায়,
 ঢেলে দিই শুভ্র কুসুমসম॥


মনোনীত এই সময় আমার,
 লও এইবার স্নেহের বোন্।
চির আশীর্ব্বাদ, ভগিনীর স্নেহ,
 যাহে পরিপূর্ণ সদা এ মন॥

নূতন বরষে আরোহণ করে,
 আবার এদিন আসিবে ফিরে।
আবার যখন, সকলে মিলিয়ে,
 আদরে যতনে সাজাবে তোরে॥

হয়ত তখন, সে সাজ দেখিতে,
 থাকিব না আর ধরণীমাঝে।
হয়ত আমার চির-আশীর্ব্বাদ,
 নীহারে মিশিয়া পড়িবে সাঁঝে॥

জানিবে না তুমি, নীরব নিশীথে,
 কা’র স্নেহাশিস্‌ পড়িছে ঝরে।
জানিবে না ওই ভারাটি হইতে,
 স্নেহের নয়নে কে দেখে তোরে॥


তবুও কেমন, যাতনা পাইলে,
 সাঁঝের নীহার আনিবে সুখ।
তবুও কেমন, তারাটি হেরিলে,
 অজ্ঞাতে উজলি উঠিবে মুখ॥

সামান্য এই যে উপহারখানি,
 অতীত স্মৃতির লহরী তুলে।
তখন কি তো’রে স্মরণ করা’বে,
 উজল নগরে যে গেছে চলে?

অসীম আনন্দ, উৎসবের মাঝে,
 মাতিবে সকলে নূতন সুখে।
অজানত এক বিষাদের ছায়া,
 পড়িবে কি তো’র সরল মুখে?

আনমনে যবে, আঁখি-তারা তোর,
 ভ্রমিবে গগণ-তারকা পাশে।
হেরিব হরষে, গভীর আঁধারে,
 উজলে উজল কেমনে মিশে॥


তারকা হইতে, হেরিব নীরবে,
 ধরণীর এক পবিত্র তারা।
চাহিয়া আঁধার আকাশের পানে,
 পূজে পরমেশে আপনা হারা॥

হেরিব তখন, পিতার আশিস্‌,
 ত্রিভুবনে নাহি তুলনা যা’র।
মাথার উপরে, পড়িয়া অমনি,
হ’তেছে অপূর্ব্ব নীহার-হার॥

মাথার উপর, অগণ্য তারকা,
 গভীর আঁধার ধরনী’পরে।
আঁধার জগতে, পিতার আশিস্‌,
 তারকার সম ঘেরিছে তোরে॥

চির আদরের, মেহময়ি বোন্‌,
 থাকিও অটল সত্যের পথে।
দয়াময় যীশু, চিরালোক যিনি,
 থাকিবেন সদা তোমার সাথে॥


সুখ-রবি-করে স্নাত হয়ে যেন,
 দিনগুলি তোর নীরবে কাটে।
ক্ষুদ্র জীবনের সরসী-উরসে,
 সুখ-শতদল যেনরে ফুটে॥

স্নেহের ভগিনি, স্নেহেতে সাজা’’য়ে,
 যতদিন বাঁচি রাখিব তোরে।
উজল উজল তারকার জ্যোতি,
 জ্বলিবে এ প্রাণে ও মুখ হেরে॥