পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
অরণ্যষষ্ঠী

অপ্রিয়বাদিনী ভার্য্যার সঙ্গে কলহ করিয়া শাস্ত্রীয় ব্যবস্থার মর্যাদা রক্ষা করিবার জন্য অরণ্যগমনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। অতঃপর বোধ হয় তাঁহাদের গৃহে রহিয়া গেলেই চলিবে। যথা। গৃহং তথা অরণ্যং!

 পুরোহিত যথা-বিধি পূজা করিবেন। ধ্যান যথা;

দ্বিভুজাং হেম গৌরাঙ্গীং রত্নালঙ্কার ভূষিতাং।
বরদাভয়হস্তাঞ্চ শরচ্চন্দ্র নিভাননাং৷৷
পট্টবস্ত্র পরিধানাং পীনোন্নত পয়োধরাং।
অঙ্কার্পিত সুতাং ষষ্ঠীমার্জারস্থাং বিচিন্তয়েৎ॥

 পূজান্তে ব্রত কথা শ্রবণ ও ব্রত নির্দ্দিষ্ট কার্য্যাদি করিয়া সে দিবস ফুলমুলাদি আহার করিতে হয়। ব্রতের ফল, সন্তান লাভ ও পুত্র কন্যার দীর্ঘ জীবন।

 ব্রতের সংকল্প বাড়ীর মেয়েদের নামে হয়। যতজন ব্রত করিবেন ততটী (১) বীজন বা পাখা, (২) পক্ক আম্র ও (৩) দুর্ব্বাগুচ্ছ আবশ্যক। এই দুর্ব্বাগুচ্ছ পূর্ব্বদিন অপরাহ্নে বাড়ীর কন্যাগণ দুর্ব্বাক্ষেত্র হইতে সযত্নে সংগ্রহ করেন। “ছয় কুড়ি। ছয় গাছি” *[১] দীর্ঘবৃন্ত দুর্ব্বা এবং ছয়টী নূতন বাঁশপাতার অগ্রভাগ একত্র করিয়া কলাগাছের ছোবড়া বা আঁশ দ্বারা বাঁধিতে। হয়। তবেই একটী দুর্ব্বাগুচ্ছ বা এক আটি দুর্ব্বা হইল।

 পূজা স্থলে পিটুলীর বিচিত্র আলিপনা দিবে। প্রত্যেক ব্রতচারিণীর নির্দ্দিষ্ট পাখার উপর একটা পাকা আম ও পূর্ব্বোক্ত এক আটি দুর্ব্বা স্থাপন করিয়া পূজাস্থলে রাখিবে। পাখায়


  1. * সর্ব্ববিধ ষষ্ঠীতে “ছয়” সংখ্যাটীর বড় সমাদর।