পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষেটের বাছা
৩৩

সিন্দুরের ফোঁটা দেওয়া বিধি। একটী কলা, একটী সুপারি ও একটী পান একত্র করিলে এক ভাগ হইল। এইরূপ প্রতি ব্রতচারিণীর নিমিত্ত ছয় ভাগ দিয়া কুচো নৈবেদ্যের ন্যায় এক খানি বা ততোধিক বড় ডালা সাজাইয়া দিবে। তাম্বুলপত্র দোভাঁজ করিয়া খড়কে দ্বারা আবদ্ধ করিয়া দিতে হয়। অন্য নৈবেদ্যাদিও দিবে।

 পূজার পূর্ব্বে (ষষ্ঠীতিথি কাল সংকীর্ণ হইলে পূজার পরে হইলেও চলে) ব্রতচারিণী তাঁহার নির্দ্দিষ্ট পাখা, আম ও দুর্ব্বার আঁটি লইয়া স্নান করিবেন। কেহ গায়ে তৈল মাখিবেন না। এস্থলে বলা আবশ্যক ষষ্ঠীব্রতের দিন তৈল ও আমিষ নিষিদ্ধ। জলে দাঁড়াইয়া পাখা ও আম বা ঁহাতে রাখিয়া দুর্ব্বার আঁটি দ্বারা “ছয় কুড়ি ছয় বার” চোখে জলের ছিটা দিবেন। পর ঐ তিন দ্রব্য ডান হাতে লইয়া বুকে ছয় বার জল দিতে হয়। স্নানান্তে ঐগুলি পূজাস্থলে রাখিয়া দিবেন। পূজা শেষে ফুল খাতে করিয়া রতকথা শুনিতে হয়। কতগুলি অতিরিক্ত দুর্ব্বা (আটি বাঁধা নয়) পূর্ব্বই সংগৃহীত থাকে। ইহাকে “যাট বাছা” দুর্ব্বা বলে। কথা শ্রবণের পর এক এক গাছি দুর্ব্বা লইয়া পূর্বোক্ত নোড়র উপর দিবে এবং এইরূপ বলিবে, যথা;

অগ্রহায়ণে[১] মুলো ষষ্ঠী, ষাট ষাট ষাট (দুর্ব্বাদান)


  1. অগ্রহায়ণ মাসের নাম সর্ব্ব প্রথমে উল্লেখ করিতে হয়। এই মাসে বঙ্গদেশে প্রাচুর্য্য হেতু সৌন্দর্য্য বর্দ্ধিত হয়। এজন্য বৎসরের অপর মাস অপেক্ষা ইহাকে শ্রেষ্ট (অগ্র) মাস কহে। মেয়েলি বারব্রত অগ্রহায়ণ মাসে যত, আযর কোন মাসে তত নয়।