পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
অরণ্যষষ্ঠী

ছেলেই না বাঁচলো তবে আর সংসারে থেকে সুখ কি। শুনেছি ষষ্ঠীঠাক‍্রুণ পাহাড় জঙ্গলে থাকেন। তাঁকে খুজে বের ক’রে কষ্টের কথা জানাব। আর যদি তাঁর দেখা না পাই তাহ’লে আর ঘরে ফিরবো না। মনের কষ্টে তিনি একদিন ব্রাহ্মণীকে ঘরে রেখে যষ্ঠীদেবীর উদ্দেশে যাত্রা করলেন।

 পথে এক গাইগোরুর সঙ্গে দেখা। গোরু বল্লে, ঠাকুর গো! প্রণমি হই; কোথায় যাচ্ছ? ব্রাহ্মণ বলেন, আমান দুঃখের কথা বলতে ষষ্ঠীঠাক‍রুণের কাছে যাচ্ছি। তাই শুনে গাই বল্লে, ঠাকুর! আমারও দুঃখের কথা আছে। দেখ আমার এত দুধ হয়েছে, তা’ মানুষেও নেয় না, বাছুরেও খায়না। বাঁটের বেদনায় আমি দিন রাত অস্থির আছি। তোমার পা’য়ে পড়ি, ষষ্ঠীঠাকরুণের কাছে আমার কথাটা ব’লো। ব্রাহ্মণ স্বীকার কল্লেন।

 জ্যৈষ্ঠ মাস, দারুণ রোদ; ব্রাহ্মণ পথে যেতে যেতে এক আম গাছের তলায় বিশ্রাম করতে গেলেন। তখন আম গাছ বল্লে, ঠাকুর! কোথায় যাচ্ছ? “যষ্ঠীঠাকরুণের কাছে যাচ্ছি”। কেন? “আমার দুঃখের কথা বলতে।” তাই শুনে আম গাছ বল্লে, ঠাকুর গো, আমার গতি কি হবে! আমার দেখ কত ফল হয়েছে, তা’ মানুষেও নেয় না, ঝড়েও পড়ে না, কাকেও খায় না। বোঁটার ব্যথায় আমি অস্থির হয়েছি। তোমার পায়ে পড়ি, ষষ্ঠীঠাক্রুণের কাছে আমার কথাটা মনে ক’রে বলো’। ব্রাহ্মণ সম্মত হ’লেন।

 তার পর এক কাঠ কুড়ুণী মেয়ের সঙ্গে দেখা। তার মাথায় এক বোঝা খড় ও কাঠ। সে বল্লে, দাদা ঠাকুর! আমার