পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষেটের বাছা
৩৭

দুঃখের কথাটা ষষ্ঠীঠাকরুণের কাছে অবশ্য ক’রে বলো। আমার খড় ও কাঠ কেউ কিনে নেয় না, আর মাথা থেকেও বোঝা নামে না।

 পথে আবার এক গরীবের মেয়ের সঙ্গে দেখা। তার মাথায় মালশা চুণ। সেও বল্লে, আমার এই চুণ কেউ কিনে নেয় না, আর মাথা থেকেও মালশা নামে না। ঠাকুর, আমার কথাটাও যেন মনে থাকে।

 তারপর পথে যেতে যেতে আরও একজন দুঃখী মেয়েমানুষের সঙ্গে দেখা। তার কোলে এক ছেলে, ঢেঁকির উপর এক পা। সেও বল্লে, ঠাকুর আমার দুর্দ্দশা দেখ; ঢেঁকি থেকে পা কিছুতেই নামাতে পারি না; ছেলেও কোল থেকে নামাতে পারি না। ঠাকুর গো! আমার উপায় কি হবে? তোমায় গড় করি, আমার কথাটা ভুলো না।

 ব্রাহ্মণ অনেক কষ্টে খোঁজ খবর ক’রে এক মহা অরণ্যে ষষ্ঠীদেবীর সাক্ষাৎ পেলেন। তিনি দেখলেন, অপরূপ! ষষ্ঠীঠাক্রুণের চাঁদপানা মুখ, সোণার অঙ্গে হীরে মাণিক, সিঁতেয় সিন্দুর, মুখে পাণ, কোলে এক টুকটুকে ছেলে, “সোণর খাটে গা, রূপোর খাটে পা, চা’দ্দিকে বইচে শ্বেত চামরের বা।”

 ব্রাহ্মণ প্রণাম ক’রে করযোড়ে দাঁড়ালেন। যষ্ঠীঠাকরুণ। “বল্লেন, তুমি কেন এসেছ তা জানি। তোমার ব্রাহ্মণী ছেলেপুলের আদর যত্ন কিছুই জানে না। আমার-দেওয়া সন্তানকে তুচ্ছু করে। এজন্য তার ছেলে বাঁচে না। তুমি আমার কাছে এই প্রতিজ্ঞা ক’রে যাও, এবার ছেলে হ’লে তোমরা তার গায় মত তুলবে না, কেবল ‘ষাট সোণা’ বলে আদর করবে, আবদার

D