পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
অরণ্যষষ্ঠী

কিছু দুঃখ নাই মনে, শ্বশুর-নন্দন!
তোমারি প্রসাদে শাঁখা সিন্দুর চন্দন।

 একদিন ঘরে ষষ্ঠীব্রত। ছেলে তার মায়ের কাছে গিয়ে। বলে, মা তেল দাও, *[১]নাইতে যাব। মা হাঁসতে হাঁসতে বল্লেন, না বাছা, যষ্ঠীব্রতের দিনে কি গায়ে তেল মাখতে আছে? খুড়ী, জেঠাই, মাসী, পিশি সবাই মিষ্টি কথায় তাই বল্লে। তখন ছেলে মনে কল্লে, অন্ততঃ শ্বশুর বাড়ীতে আমার কথা অবহেলা কত্তে কারু সাধ্য হবে না। এই ভেবে, সে দুটে। শ্বশুর বাড়ীতে চ’লে গেল। সেখানে জামাই আদর; শুধু মিষ্টি কথায় মন ভুলানো নয়, দেখবার, শোনবার, খাবার সবাতেই মিষ্টি। জামাই বল্লে, আমি নাইতে যাবো, তেল দাও। সুন্দরী শালীরা তার চা’দ্দিকে ব’সে হেঁসে হেঁসে বলে, তুমি হঠাৎ এসেছ, রান্নার এখনো ঢের দেরী; তুমি ততক্ষণ একটু জল খাও। এই ব’লে কেউ আমের থালা, সন্দেশের থালা, কেউ পায়েস ও ক্ষীরের বাটী ইত্যাদি, কত নাম বলি, এই সব এনে জামাইকে ঘিরে বসলো। জামাই বল্লে, আমি নেয়ে কিছুই খাব না। তখন শালীরা তেলের বদলে তেলের বাটিতে ক’রে মধু এনে দিলে। তাই মাথায় দিয়ে জামাই ভাবলেন, আহা! শ্বশুর বাড়ীর তেলটুকও মিষ্টি! বেগতিক দেখে “মধুর পুরী” ত্যাগ ক’রে ছেলে এক দৌড়ে কলুর বাড়ী গিয়ে তার ভাঁড় ভেঙ্গে গায়ে তেল মাখলে। তেল মেখেই


  1. *পূর্ব্বেই বলা হইয়াছে, ষষ্ঠীব্রতের দিন তৈল ম্রক্ষণ ও আমিষ ভক্ষণ নিষিদ্ধ। পরবর্তী ব্রত কথায় (মুলোষষ্ঠী) আমিষ-বিভ্রাট বর্ণিত হইয়াছে।