পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২

মূলা-ষষ্ঠী ব্রত।

 অগ্রহায়ণ মাসের শুক্লষষ্ঠী তিথিতে মূলোষষ্ঠীব্রত করিতে হয়। নিরামিষ আহারের গৌরব প্রকটিত করা অন্যতম উদ্দেশ্য বলিয়া বোধ হয়। পক্ক আম্রফল নৈবেদ্যের প্রধান উপকরণ বলিয়া জৈষ্ঠ্য মাসের অরণ্যষষ্ঠীব্রতের অপরনাম আমষষ্ঠী। তদ্রূপ, শীতকাল সুলভ (অথচ মাঘ মাসে নিষিদ্ধ) মুলক তরকারির অগ্রহায়ণে প্রথম আবির্ভাব বলিয়া উহা অতি সমাদরে নিবেদন করা যায়, এই জন্য এই ব্রতের ঐরূপ নামকরণ। ইহার অপর নাম “ছয় আনাজের যষ্ঠী”। ব্রতচারিণী সধবাগণও এ দিন ছয় আনাজের নিরামিষ ব্যঞ্জন আহার করেন। ছয় আনাজের মধ্যে মুলো সর্ব্বপ্রধান। অন্য পাঁচটী তরকারি সম্বন্ধে বিশেষ নিয়ম নাই। সাধারণতঃ গোল আলু, রাঙ্গা আলু, বেগুণ, মিঠে কুমড়ো, সিম,পটোল, ঝিঙ্গে, উচ্ছে, কপি, কড়াইশুঁটি এতন্মধ্যে যে কোন পাঁচটী লইবে। আনাজ কুটিয়া বাটনা বঁটিয়া পুজার কাছে দিতে হয়। আলিপনা, পূজা ও অন্য নৈবেদ্যাদি অরণ্যষষ্ঠীর ন্যয়। কেবল দুর্ব্বার আটি ও পাখা লইতে হয় না। কিন্তু নোড়ার উপর দুর্ব্বা দ্বারা ‘ষাট বাছা’ তন্ত্র মন্ত্র অরণ্যষষ্ঠীর মত। আর একটী বিশেষ প্রভেদ এই যে পিটুলির দ্বারা ক্ষুদ্র গাই ও ও বাছুরের পুতুল গড়িতে হয়। যত জন ব্রত করিবেন ততটী গাই ও ততটা বাছুর গড়িবে। হলুদ, চুণ ও মশলা সংযোগে সাদা, হলদে, লাল প্রভৃতি নানা রঙ্গের পুতুল গড়িবে। পূজান্তে প্রত্যেকে একটা গাই ও একটা বাছুর হাতে লইয়া ব্রত কথা শুনিবে। পরে ছেলেরা ঐ পুতুল দ্বারা খেলা করে।