পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছােট বউ
৪৭

বাপের বাড়ী হলে বেশ ক’রে খিচুড়ি খাওয়া যেতো। মেজো বউ বল্লেন, আজ হেন দিনে বাপের বাড়ীতে ঘি মেখে চা’ল কড়াই ভাজা, কাঁটাল বীচি ভাজা, আর গরম গরম লুচি খেতুম। ছোট বউ জা-দের বাপের বাড়ীর বড়াই শু’নে চুপ করে রইলেন। তাঁরা বল্লেন, ছোট বউ, তুমি কিছু বল্লে না? দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে ছোট বউ বল্লেন, বাপের বাড়ীতে “সেজনের” (অর্থাৎ “আমার”। ৩ পৃষ্ঠার নিম্নে টীকা দেখ।) আর কে আছে! বড় দুই ভাই ছিল, তাদেরও মা মনসা নিয়েছেন। শুনেছি, ছেলে বেলায় সর্পাঘাতে তারা মারা গেছে। বৃষ্টি বাদলার দিনে তোমাদের যদি ভাল খেতে এতই সাধ, তবে এখানেই কি আজ ঠাকরুণকে বলে খিচুড়ী আর ভাজাভুজি হ’তে পারে না? তোমরা নেয়ে ঘরে যাও; আমি দেখি যদি পারি পুকুর থেকে দুটি মাচ নিয়ে গিয়ে তোমাদের খাওয়াব। বড় বউ বল্লেন, এখানকার এ ডোবাটার ভেতর আর কি পাবে। আমার বাপের বাড়ীতে বাইরের দুটী পুকুরে বড় বড় রুই, কাতলা, ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় না বটে, কিন্তু বল্লে বিশ্বাস করবে না, আমাদের খিড়কীর পুকুরে প্রায় এক হাত লম্বা কই মাচ যে কত, তা আর কি বলবো; আর আঃ, তার স্বাদই বা কি! মেজ বউও গরব ক’রে ঐরূপ একটা কিছু বল্লেন।

 বড় ও মেজো নেয়ে চলে গেল পরে, ছোট বউ দেখলেন, দুটো শোল মাচ জলে ভেসে বেড়াচ্ছে। তিনি তাই ধরে নিয়ে গিয়ে হেঁসেলে গামলা ঢাকা দিয়ে রাখলেন। তারপর গামলা তুলে দেখেন, শোল মাচ তো নয়, দুটা সাপ! তার গা শিউরে উঠলো। তখন সাপ দুটী সুন্দর মানুষের মুর্ত্তি ধরে বল্লে, বোন