২৩৬ * লক্ষ্যমণ শুনাইলেন, রামের মূর্ত্তি সহসা বৈরাগ্যের শ্রীতে ভূষিত হইয়া উঠিল, তিনি ঋষিবৎ নির্লিপ্তভাবে গুরুতর বনবাসাঙ্গা মাথায় তুলিয়া লাইলেন, অভিষেক-সম্ভারের সমস্ত আয়োজন যেন তঁহাকে ব্যঙ্গ্য করিতে লাগিল; সেই দিন সেই উৎকট মুহূর্ত্তেও তাহার আর কোন সঙ্গী ছিল না, তাহার পশ্চাদ্ভাগে চিরসুহৃৎ ভক্ত ক্ষুধু হইয়া দাড়াইয়াছিলেন, বাল্মীকি দুইটী ছত্রে সেই মৌন চিত্রটী আঁকিয়াছেন “তং বাস্পপরিপূর্ণাক্ষঃ পৃষ্ঠতোহনুজগামহ। লক্ষ্মণঃ পরমব্রুদ্ধঃ সুমিত্রানন্দবৰ্দ্ধনঃ॥” -লক্ষ্মণ অতিমাত্র ক্রুদ্ধ হইয়া বাষ্পপূর্ণচক্ষে ভ্রাতার পশ্চাৎ পশ্চাৎ যাইতে লাগিলেন। এই অন্যায় আদেশ তিনি সহা করিতে পারেন নাই। রামচন্দ্র র্যাহাদিগকে অকুষ্ঠিতচিত্তে ক্ষমা করিয়াছেন, লক্ষ্মণ র্তাহাদিগকে ক্ষমা করিতে পারেন নাই। রামের বনবাস লইয়া তিনি কৌশল্যার সম্মুখে অনেক বান্বিতণ্ডা করিয়াছিলেন, ক্রুদ্ধ হইয়া তিনি সমস্ত অযোধ্যাপুরী নষ্ট করিতে চাহিয়াছিলেন। তিনি রামের কর্ত্তব্যবুদ্ধির প্রশংসা করেন নাই-এই গৰ্হিত আদেশপালন ধর্ম্মসঙ্গত নহে, ইহাই বুঝাইতে চেষ্টা করিয়াছিলেন। এই তেজস্বী যুবক যখন দেখিতে পাইলেন, রামচন্দ্র একান্তই বনবাসে যাইবেন, তখন কোথা হইতে এক অপূর্ব্ব কোমলতা তাহাকে অধিকার করিয়া বসিল, তিনি বালকের ন্যায় রামের পদযুগো লুষ্ঠিত হইয়া কঁাদিতে লাগিলেন “ঐশ্বর্য্যঞ্চাপি লোকানাং কাময়ে ন ত্বয়া বিনা।” —অমরত্ব কিংবা ত্রিলোকের ঐশ্বর্য্যও আমি তোমাভিন্ন আকাঙ্ক্ষা