ठन्त्र ২৩৭ করি না। রামের পাদপীড়নপূর্বক—উহা অশ্রুসিক্ত করিয়া নববধূটীর ন্যায় সেই ক্ষাত্রতেজোদীপিত মূর্ত্তি ফুলসম সুকোমল হইয়া সঙ্গে যাইবার অনুমতি প্রার্থনা করিল। এই ভিক্ষা স্নেহসূচক দীর্ঘ বক্তৃতায় অভিব্যক্ত হয় নাই, অতি অল্প কথায় তিনি রামের সঙ্গী হইবার জন্য অনুমতি চাহিলেন, কিন্তু সেই অল্প কথায় স্নেহগভীর আত্মত্যাগী হৃদয়ের ছায়া পড়িয়াছে। রাম হাতে ধরিয়া তাহাকে তুলিয়া লইলেন, “প্রাণসম প্রিয়”, “বশ্য”, “সখা” প্রভৃতি স্নেহমধুর সম্ভাষণে র্তাহাকে সন্তুষ্ট করিয়া বনযাত্রা হইতে প্রতিনিবৃত্ত করিতে চেষ্টা পাইলেন, কিন্তু লক্ষ্মণ দুই একটী দৃঢ় কথায় তাহার অটল সঙ্কল্প জ্ঞাপন করিলেন, “আপনি শৈশব হইতে আমার নিকট প্রতিশ্রুত, আমি আপনার আজন্ম সহচর, আজ তাহার ব্যতিক্রম করিতে চাহিতেছেন কেন?” লক্ষ্মণ সঙ্গে চলিলেন। এই আত্মত্যাগী দেবতার জন্য কেহ বিলাপ করিল না। যে দিন বিশ্বামিত্র রামকে লইয়া যাইবার জন্য দশরথের নিকট প্রার্থনা করিয়াছিলেন, সে দিন ‘উনষোড়শবর্যো মে রামে রাজীবলোচনঃ।” বলিয়া বৃদ্ধ রাজা ভীত হইয়া পড়িয়াছিলেন, কিন্তু তৎকনিষ্ঠ আয় একটী রাজীবলোচন যে দুরন্তরাক্ষসবধকল্পে ভ্রাতার অনুবত্তী হইয়া চলিলেন, তজ্জন্য কেহ আক্ষেপ করেন নাই। আজ রাম, লক্ষ্মণ, সীতা বনে চলিয়াছেন, অযোধ্যার যত নয়নাশ্র, তাহ রহিয়া রহিয়া রামসীতার জন্য বর্ষিত হইতেছে। কিন্তু লক্ষ্মণের জন্য কেহ আক্ষেপ করেন নাই, এমন কি, সুমিত্রাও বিদায়কালে পুত্রের কণ্ঠালগ্ন হইয়া ক্রন্দন করেন নাই, তিনি দৃঢ় অথচ স্নেহাৰ্দ্ধকণ্ঠে