শ্রীকান্তের নিশীথ অভিযান কয়েক মুহুর্তেই ঘনান্ধকারে সম্মুখ এবং পশ্চাৎ লেপিয়া একাকার হইয়া গেল। রহিল। শুধু দক্ষিণ ও বামে সীমান্তরালপ্রসারিত বিপুল উদ্দাম জলস্রোত এবং তাহারই উপর তীব্র গৃতিশীল এই ক্ষুদ্র তরণীটী এবং কিশোরবয়স্ক দুটী বালক। প্রকৃতিদেবীর সেই অপরিমেয় গম্ভীর রূপ উপলব্ধি করিবার বয়স তাহা নহে, কিন্তু সে কথা আমি আজও ভুলিতে পারি নাই। * বায়ুলেশহীন, নিষ্কম্প, নিস্তব্ধ, নিঃসঙ্গ নিশীথিনীর সে যেন এক বিরাট কালীমূর্ত্তি। নিবিড় কালো চুলে দু্যলোক ও ভূলোক আচ্ছন্ন হইয়া গেছে, এবং সেই সুচিভেদ্য অন্ধকার বিদীর্ণ করিয়া করাল দংষ্ট্রারেখার ন্যায় দিগন্তবিস্তৃত এই তীব্র জলধারা হইতে কি এক প্রকারের অপরূপ স্তিমিত দু্যতি নিষ্ঠুর চাপা হাসির মত বিছুরিত হইতেছে। আশে পাশে সম্মুখে কোথায় বা উন্মত্ত জলস্রোত গভীর তলদেশে ঘা খাইয়া উপরে উঠিয়া ফাটিয়া পড়িতেছে, কোথায় বা প্রতিকুল গতি পরস্পরের সংঘাতে আবর্ত্ত রচিয়া পাক খাইতেছে, কোথাও বা অপ্রতিহত জলপ্রবাহ পাগল হইয়া ধাইয়া চলিয়াছে। 构 আমাদের নৌকা কোণাকুণি পাড়ি দিতেছে, এইমাত্র বুঝিয়াছি। কিন্তু, পরপারের ঐ দুর্ভেদ্য অন্ধকারের কোনখানে যে লক্ষ্য স্থির করিয়া ইন্দ্র হাল ধরিয়া নিঃশব্দে বসিয়া আছে, তাহার কিছুই জানি না। এই বয়সেই সে যে কত বড় পাকা