পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৪৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অধ্যাপক ৪২৯ কানাই বল্লে—“হরিদ্বার থেকে যে ভাগীরথী নেমে আসছেন তিনি ত আর ফিরে যান না । আদিমকালে ভগীরথ যখন তাকে শঙ্খ বাজিয়ে এনেছিলেন আজও তিনি চলেছেন তেমনি কলকলবাহিনী হয়ে একটানা স্রোতে—তাতে জোয়ার-ভাট নেই ।” স্বজাত আবার জিজ্ঞাসা করলে—“এ দুটো উপমা দ্বারা আপনি কি বলতে চান ?” কানাই বল্লে—“আমি বলি এ কথা যে সকলের জীবনের প্রবাহ এক রকমে বয় না । কারুর জীবন চলে একটানা বয়ে মহাসাগরের উদ্দেশে, তার দ্বিধা নেই, বাধা নেই, বিরাম নেই । কারুর চিত্তনদী বা উভয়ত বাহিনী হয়ে ছোটে সাগরের দিকে, ছোটে গ্রামের দিকে, কোন দিকেই পারে না আপনাকে নিঃশেষ করে দিতে । কোনও স্রোত বা বাধা পড়ে গিয়ে পুকুরের মধ্যে, হয়ত সেখানেও কোনও প্রণালী দিয়ে যোগ থাকে বাইরের নদীর সঙ্গে, ভিতরে ভিতরে একটু অনুভব করে জোয়ার-ভাটা । কোনও জল বা একেবারে বাধা পড়ে’ যায় চারটি পাড়ের মধ্যে—সেখান থেকে বের হবার তার অবকাশ থাকে না ।” সুজাতা বল্লে—“আমি ত দেখছি তাহলে যত দুঃখ তা কেবল খালের জলেরই, পূর্ণ হওয়াতেও তার তৃপ্তি নেই, রিক্ত হওয়াতেও তার তৃপ্তি নেই। তাকে কেবল ছুটতে হয় দোটানায় ।” কানাই বল্লে—“এই দোটানায় ছোটে বলেই থাকে তার পবিত্রতা, নইলে তার প্রবাহে জলের এত বিশালতা নেই যে নিরস্তর সাগরে ছুটে গিয়েও থাকৃবে তার পূর্ণতা, এমন স্বাভাবিক পবিত্রত নেই যে কিছুতে পারবে না তাকে মলিন করতে । হিমালয় থেকে ষে গঙ্গা ছুটে আসে, নানা শাখা নদীকে সে দেয় আশ্রয় আপন বুকে । তাদের