পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৪৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অধ্যাপক 88 সর্ব্বপ্রাণিসাধারণ । কিন্তু মানুষের মধ্যে যখন এই দেহের আকর্ষণ প্রকাশ পায়, তখন সে আকর্ষণের মধ্যে দেহজ ব্যবহারের কল্পনা যে সকল সময়েই অঙ্কিত থাকে তা বলা যায় না । যার পরিণতি হবে দেহজ ব্যবহারে বা মিলনে, তেমন আকর্ষণও যখন মানুষের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পায় তখন সে নিয়ে আসে তার সঙ্গে মনের অসীমতা । সংস্কৃত সাহিত্যে এই জাতীয় কামনার বহু ছবি দেওয়া হয়েছে এবং জীবনেও এর বহু দৃষ্টান্ত মেলে । সর্ব্বত্রই এই কামনা মনকে তোলে আকুল করে', মনকে করে বিমর্দ্দন, মনকে করে মাতাল । সেই জন্য এই কামনাকে বলে ‘মনোজ’, ‘মন্মথ’, ‘মদন পশুজগতে হয় ত যেটা প্রকাশ পাম কেবল দেহজ সন্নিধানের আকর্ষণে, মামুষের মধ্যে সেই কামনাই প্রকাশ পায় মনের উৎকট আকাঙ্ক্ষার মধ্যে । অবসর পেলে এই আকাজক্ষ আপনাকে ক্ষয় করে ফেলে দেহজ বৃত্তির মধ্যে, দেহজ সন্নিকর্ষের মধ্যে । কিন্তু পরোক্ষভাবে যতক্ষণ মনের অকিঞ্চনে, দৈন্তে ও আর্ত্তিতে, ত্যাগে বা প্রীতিতে এই কামনা আত্মপ্রকাশ করে ততক্ষণ সেই কামনার মধ্যে যে একটা দৈহিক জৈবশক্তিও কাজ করছে তা অনেক সময়ই অহুভব করা যায় না। এই কামনা হয় ত প্রকাশ পায় বারংবার প্রিয়জনের স্মরণে, তার আলোচনায়, তাকে দেখার ইচ্ছায়, তার সঙ্গে কথা বলবার ইচ্ছায় ; কিন্তু এগুলির মধ্যে যে কোনও দেহবৃত্তি লুক্কায়িত আছে বা দেহবৃত্তির প্রেরণাতেই যে এগুলি সংঘটিত হচ্ছে, তা একান্তই দুৰ্নির্ণেয় । কোনও একটা অবস্থায় হয় ত প্রধান হয়ে প্রকাশ পায় একটা দেহজ কামনা, কিন্তু যে পর্য্যস্ত না সেই ভাবটি ফুট হয়ে ওঠে, সে পর্য্যন্ত আমাদের কোনও প্রত্যক্ষ উপলব্ধির দ্বার। তাকে আমরা দৈহিক বলে নিশ্চয় করে নির্দেশ করতে পারি না । -